মঞ্জুরে আলম লাল, জুড়ী:
জাতীয় নির্বাচনের পর চলছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। আর এতেই মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ পরিবারের সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই নিজে বা তাদের সমর্থকদের মাধ্যমে মাঠ গরম করে তুলছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন। তবে এখনও বিএনপি বা ২৩ দলীয় জোটের কোনো প্রার্থী প্রকাশ্যে না থাকলেও কেউ কেউ প্রার্থী হওয়া নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হবার পর নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করে এবং মার্চ থেকে ধাপে ধাপে নির্বাচন করার ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর থেকেই জুড়ী উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থিরা গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সংখ্যাই বেশি। পাশাপাশি কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। কেউ কেউ নিজ থেকেই প্রার্থীতা ঘোষণা দিয়ে গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউবা দলীয় ফোরামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সাথে যোগাযোগ করে নিজের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করছেন। অনেক প্রার্থী নিজে বা সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীতার খবর প্রচার করছেন। তবে প্রকাশ্যে এখনও কেউ মুখ খুলছেন না।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন-সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম এম এ মুমিত আসুকের স্ত্রী, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান গোলশান আরা মিলি, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা বদরুল হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম এম এ মুমিত আসুকের ছোট ভাই হল্যান্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ মুয়ীদ ফারুক, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কিশোর রায় চৌধুরী মনি, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কুলাউড়া থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন লেমন, পূর্বজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল ইসলাম।
এদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও কিশোর রায় চৌধুরী মনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন কিংবা দলীয় সমঝোতার ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে তিনি স্বপদে নির্বাচন করতে পারেন বলে সমর্থকদের মুখে শোনা যাচ্ছে।
এদিকে ২৩ দলীয় জোট থেকে আলোচনায় আছেন সাবেক বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান আছাদ উদ্দিন বটল, বিএনপি নেতা জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কারাবন্দি মাছুম রেজা, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রহমান ও বিএনপি নেত্রী হোসনে আরা। এদের মধ্য থেকেই কেউ দল বা জোট কিংবা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিংকু রঞ্জন দাস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল রানার নাম আলোচনায় রয়েছে। তাছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা আব্দুস সহিদ, উপজেলা জাতীয় পর্টির সাধারণ সম্পাদক সুরমান আহমদ চৌধুরী নির্বাচন করবেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেত্রী রনজিতা শর্মা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেত্রী আজিবুন খানম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হাজেরা বেগম আলোচনায় রয়েছেন।
এদিকে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব উপজেলা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে পারেন। এছাড়াও অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী এখন নিরব থাকলেও সময়-সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে বসে নেই ভোটাররা। উপজেলার সর্বত্র সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে জোর আলোচনা-সমালোচনা চলছে।