আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে আজ শনিবার সিলেট আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সফরকে ঘিরে সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন, সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আর মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন সিলেট বিভাগের ১৭ আওয়ামী লীগ প্রার্থী। তাঁরা মহাজোটের হয়ে এবার নির্বাচনে লড়ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দান পরিদর্শন করেছেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রতিবারই নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটে এসে ওলি আউলিয়াদের দোয়া নিয়ে যান। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তার এই সফরকে ঘিরে সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। সিলেটের সমাবেশস্থল আজ জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে সিলেটে স্বাগত জানিয়ে সিলেটে প্রচার মিছিল হয়েছে। আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা এই প্রচার মিছিলে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আজ সকাল ১০টার দিকে আকাশপথে সিলেটে এসে পৌঁছাবেন। এরপর তিনি সিলেটে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরান (রহ.) ও সিলেটের প্রথম মুসলমান হযরত বুরহান উদ্দিন (রহ.)’র মাজার জিয়ারত করবেন। দুপুরে তিনি সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দানের আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেবেন। এ সমাবেশে সিলেট বিভাগের আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন। তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী পরিচয় করিয়ে দেয়ার পাশাপাশি নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে সমাবেশে ভাষণ দেবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রী আকাশপথেই সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে নিরাপত্তার ফাঁক রাখা হচ্ছে না। শুক্রবার থেকে প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতস্থল সবখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হচ্ছে সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দান। নির্বাচনী সমাবেশের কারণে এবার প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে ঘিরে বাড়াবাড়ি করছে না আওয়ামী লীগ। আগে থেকে প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়নি মাইকিং। এ ছাড়া ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের আধিক্য নেই। নির্মাণ করা হয়নি কোনো তোরণও। সিলেটে কোনো শোডাউনের ব্যবস্থাও করা হয়নি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান জানান, প্রধানমন্ত্রীর জন্য সিলেটের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। সিলেটের আলীয়া মাদরাসা ময়দানে জনগণের ঠাঁই হবে না। তিনি বলেন, এবার যেহেতু নির্বাচনের সময় এই সমাবেশ এ কারণে নির্বাচনী আইন মেনেই ছোটো আকারে মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০ ফুট বাই ২০ ফুট মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীরা উপস্থিত থাকবেন। সিলেটের নেতারা মঞ্চ ছাড়া আলাদা স্থানে বসবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাজার জিয়ারতের পর বিশ্রাম নিয়ে সমাবেশে চলে আসবেন। সেখান থেকে তিনি ঢাকার পথে রওয়ানা দেবেন।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীকে সিলেটের উন্নয়নের ব্যাপারে কোনো কিছুই বলতে হয় না। প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকে সব উন্নয়ন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সিলেটে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সিলেটের মানুষ উন্নয়নের সন্তুষ্টি জানাতে আজ মাদরাসা মাঠে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আগামী নির্বাচনে জয়ী করার প্রতিশ্রুতি জানাবেন।