আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন আজিজুস সামাদ আজাদ ডন। অন্য কোনো দলে বা জোটে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
শনিবার রাতে সিলেট নগরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন। মনোনয়ন না পেলেও দলে তার যে অবস্থান আছে, তাই ধরে রাখার ব্যাপারে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমে মনোনয়ন না পেলে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন বলে যে সংবাদ প্রকাশ করেছে তা দুরভিসন্ধি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এর ব্যাখ্যা দিতে সিলেটে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় করেন ডন।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনটি মূলত আওয়ামী লীগের স্থায়ী আসনগুলোর একটি। অনেকে মজা করে বলেন আওয়ামী লীগের খানদানি আসন। আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় সংসদের সাবেক উপনেতা মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদের সুবাদে এটি শক্ত ঘাঁটি। তার মৃত্যুর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমএ মান্নান। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি জয়লাভ করেন। তাকে এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।
তবে সেই নির্বাচনের বিশেষত্বও আছে। সেবার সামাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন দলের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তারপর স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। মূলত এ নির্বাচন থেকে এখনো কেউ কেউ বিদ্রোহী বা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হওয়ার কারণ খোঁজেন।
এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডন ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করেন। সেবারও তার প্রার্থিতা দলের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই নির্বাচনেও আমি দলীয় ‘যথাযত কর্তৃপক্ষের’ পরামর্শে প্রার্থী হয়েছিলাম।
ডন বলেন, তারা নিশ্চয় কোনো ক্লু পেয়ে লিখেছেন বা কেউ তাদের বিভ্রান্ত করেছেন। গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা মনে রেখেও লিখতে পারেন। তাদের এসব লেখাকে দলীয় হাইকমান্ড কোনো পাত্তা দিচ্ছেন না উল্লেখ করে আজিজুস সামাদ ডন বলেন, এসব নিয়ে আমি বা আমার দলীয় হাইকমান্ড মোটেও বিভ্রান্ত নয়। আমি তাদের সঙ্গে বিশেষ করে দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করি। দলীয় হাইকমান্ড চাইলে আমি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যার প্রস্তাব দিলে ‘দরকার নেই’ বলে উড়িয়ে দেন তারা। তার মানে দল আমার ওপর আস্থাশীল।
এ প্রসঙ্গে আজিজুস সামাদ ডন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার বাবার সম্পর্ক কী ছিল, সারা দেশের মানুষ তা জানে। আমার রক্তে আওয়ামী লীগ, নেত্রীর প্রতি আমি সবসময় শ্রদ্ধাশীল। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা অমান্য করার কোনো অভিপ্রায় আমার নেই। কোনোকালে ছিল না; এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। এই রক্ত বেইমানি করতে জানে না।
ডন আরও বলেন, নেত্রীর নির্দেশের বাইরে কখনো পা ফেলিনি। আমার রক্তে আওয়ামী লীগের আদর্শ মিশে আছে। দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি বরাবর অনুগত ছিলাম, এখনো আছি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডন বলেন, মনোনয়ন না পেলে দুটি কাজ করার আছে। অবসর নেয়া বা আত্মহত্যা করা। কিন্তু রাজনীতি থেকে আসলে অবসর নেয়া যায় না। আমিও অবসর নেব না। বাকি থাকলো আত্মহত্যা করা। আপনাদের কী মনে হয়, মনোনয়ন না পেলে আমি আত্মহত্যা করব?