দেলোয়ার হোসাইন:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সর্বত্রই নির্বাচনী উত্তাপ। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে সারাদেশ। শেষ পর্যন্ত কে পাচ্ছেন দলীয় টিকিট এ নিয়ে মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। ফলে ভোটের লড়াইয়ে নামার আগে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে লড়াইয়ে নেমেছেন দুই বড় দল বা বড় দুই জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সারা দেশের ন্যায় মৌলভীবাজার জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করছেন একাধিক মনোয়ন প্রত্যাশী।
বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলার ৪টি আসন থেকে দুই ডজনের বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে [মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী)] ছাড়া বাকি ৩টি আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
মৌলভীবাজার জেলার ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা…
দলীয় সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন:
মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী):
নৌকার ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) এ আসনের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ও সরকার দলীয় হুইপ মো. শাহাব উদ্দিন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৮ বিভাগের মধ্যে ৫ বিভাগের ৭টি আসনে একক প্রার্থী পাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে সিলেটে বিভাগ থেকে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন হুইপ মো. শাহাব উদ্দিন।
দু’টি উপজেলা (বড়লেখা-জুড়ী) একটি পৌরসভা, ১৬টি ইউনিয়ন ও ১৯টি চা বাগান নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৪ জন।
মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া):
কুলাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ১১ জন। তাঁরা হলেন- এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মতিন, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম সফি আহমদ সলমান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম নাদেল, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক এআইজি সৈয়দ বজলুল করিম বিপিএম, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেণু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অ্যাড. আতাউর রহমান শামীম, সিলেট বিএমএ সভাপতি ডা. রুকন উদ্দিন, কুলাউড়া ইয়াকুব তাজুল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রউফ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুল মুক্তাদির তোফায়েল, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সাংবাদিক কামাল হাসান।
১টি উপজেলা (কুলাউড়া), ১টি পৌরসভা, ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪১ হাজার ১‘শ ০৮ জন।
মৌলভীবাজার-৩ (সদর ও রাজনগর):
মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উডজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন- এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ, মৌলভীবাজার চেম্বারের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন, আব্দুল মালিক তরফদার সোয়েব, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থ, এম এ রহিম সিআইপি, প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর ভাই সৈয়দ লিয়াকত আলী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল।
দু’টি উপজেলা (মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর) সদর উপজেলার ১টি পৌরসভা, ১২টি ইউনিয়ন ও রাজনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯১ হাজার ১‘শ ৪৯ জন।
মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের একাংশ):
চা-বাগান অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন- এ আসনের বর্তমান সংসদ ও সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মনসুরুল হক ও জেলা পাবলিক প্রসিউকিউটর অ্যাডভোকেট এ এস এম আজাদুর রহমান।
দু’টি উপজেলা (শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের একাংশ) শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১টি পৌরসভা, ৯টি ইউনিয়নের এবং কমলগঞ্জ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-৪ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫ হাজার ৩৯৫ জন।
প্রসঙ্গত, পুনঃতফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ২ ডিসেম্বর। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। আর ভোটগ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর।