মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

শ্রীমঙ্গলে ১৪ মাস পর স্বপ্না খুনের রহস্য উন্মোচন, প্রেমিক গ্রেফতার
ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট



বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘ ১৪ মাস পর স্বপ্না বেগম খুনের মূল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। এ ঘটনায় খুনী পরকীয়া প্রেমিক আজাদ মিয়াকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, গত বছরের ১ আগস্ট উপজেলার সাইটুলা বস্তি থেকে স্বপ্না বেগমের লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজারের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ভিকটিমের বোন স্বপ্না বেগমের স্বামী গফুর মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার তদন্তভার ইন্সপেক্টর অপারেশন সোহেল রানার উপর অর্পণ করা হলে তিনি ভিকটিমের স্বামী গফুর মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করে প্রকৃত খুনী ভিকটিম স্বপ্না বেগমের পরকীয়া প্রেমিক উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সাইটুলা গ্রামের মৃত হবিব মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়াকে (২৮) শনাক্ত করেন। আজাদ ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন।

দীর্ঘ ১৪ মাস পর গত ৭ সেপ্টেম্বর আজাদ মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে আজাদ জানান, সাইটুলা বস্তির খালাতো ভাই সম্পর্কীয় গফুর মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে প্রায় দশ বছর ধরে ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি হয়। প্রায় প্রতিদিনই আজাদ মিয়া তাদের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন কাজকর্মে গফুর মিয়াকে সহায়তা করতেন।
এই সুবাদে সাড়ে তিন বছর আগে গফুর মিয়ার স্ত্রী স্বপ্না বেগমের (৩৫) সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি হয়। এরই মাঝে বাড়ির জমি নিয়ে গফুর মিয়ার সাথে তার স্ত্রী স্বপ্নার ঝগড়া হয়। স্বপ্না বেগম ঝগড়ার বিষয়টি আজাদ মিয়াকে জানালে তিনি সিএনজি যোগে স্বপ্নার ছোট মেয়ে এবং ছেলে সন্তানসহ রাজনগরস্থ তার পিতার বাড়িতে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তখন থেকে আজাদ মিয়ার সাথে স্ত্রী স্বপ্না বেগমের সম্পর্কের বিষয়টি সন্দেহ চোখে দেখেন গফুর মিয়া। স্বপ্না বেগম প্রায় ৫ (পাঁচ) মাস পিতার বাড়িতে অবস্থান করেন এবং পরে আদমজী নারায়ণগঞ্জ গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি নেন।

স্বপ্না বেগম সেখানে যাওয়ার কিছুদিন পর আজাদ মিয়া সেখানে যান এবং একই কক্ষে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করতে শুরু করেন। এভাবে প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্বপ্না ও গফুর মিয়ার আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় মুরুব্বিদের মধ্যস্থতায় তারা পুনরায় ঘর সংসার করার সিদ্ধান্ত হলে স্বপ্না বেগম আদমজী নারায়ণগঞ্জ থেকে তার পিতার বাড়িতে চলে আসেন এবং পরে গফুর মিয়ার বাড়িতে এসে ঘর সংসার শুরু করেন।

এর প্রায় ১৫/২০ দিন পর আজাদ মিয়াও বাড়ি চলে আসেন। আজাদ বাড়ি এসে একদিন স্বপ্না বেগমের সাথে দেখা করে কথাবার্তা বলেন। এরপর ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আজাদ মিয়া গফুর মিয়ার বাড়িতে গিয়ে ঘরের টিনের বেড়ায় টোকা দিলে স্বপ্না বেগম জানালা খুলেন। আজাদ মিয়া তার সাথে বাইরে কোথাও কথা বলতে চান।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি দরজা খুলে বাইরে এস কথা বলার এক পর্যায়ে স্বপ্না বেগমের কাছে পাওনা ২ হাজার টাকা চান আজাদ মিয়া। এসময় কোনো টাকা পাবে না বলে স্বপ্না বেগম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

এতে আজাদ মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে দুই হাত দিয়ে স্বপ্না বেগমের গলা ধরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে তার গলা চেপে ধরেন। ৫/৬ মিনিট চেপে ধরে রাখার পর দেহ নিস্তেজ হয়ে যায়। মারা গেছে ভেবে আজাদ তার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে ঘরের ভেতর দরজার পাশে ফেলে রেখে দরজা বন্ধ করে দ্রুত বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।