আর মাত্র কয়টা দিন পরেই হাতে মেহেদি দিয়ে নববধূ সাজার কথা ছিল নীলার। পরিবারের সবাই মিলে ব্যস্ত ছিলেন আনন্দঘন একটি আয়োজনের। শেষ হয়েছে বিয়ের কেনাকাটাও। লাল টুকটুকে শাড়ি, আলতা সবই কেনা হয়েছে। অপেক্ষা মাত্র কয়টা দিনের।
আগামী মাসের ১২ তারিখ নীলার বিয়ে ছিল। যে বাড়িতে প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজন মিলে নাচ গান আর ভুড়িভোজ করার কথা ছিল সেই বাড়িতে এখন কান্নার রোল। প্রতিবেশীরা চোখের পানি ফেলছেন।
ভাই ছোট তাই বিয়ের সব চাপ বাবাকে সামলাতে হবে, অসুস্থ বাবা যেন বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে আরও অসুস্থ না হয়ে পড়েন তাই বিয়ের ঝামেলার আগে বাবার চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন ঢাকায়। বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আর ঘরে ফিরলেন না মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার বাসিন্দা সামিনা নুর নীলা (২৫)।
একই দুর্ঘটনায় তার মা রুবিনা বেগম (৪৫) ও এক বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাবা আলফু মিয়া (৬৫) ও ভাই আসিফ (২০)। নীলার আরেক বোন চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছেন।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে ঢাকা থেকে ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রামপুরা নামক স্থানে দ্রুত গতিতে চলা এনা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পার্শ্ববর্তী একটি খাদে পড়ে পানিতে ঢুবে যায়। এতে অপর এক যাত্রীসহ নিহত হন নীলা ও তার মা।
এদিকে দুর্ঘটনার খবরে নীলার স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। সন্ধ্যার পর মরদেহ আসলে এলাকায় স্তব্ধতা নেমে আসে, কাঁদতে থাকেন প্রতিবেশীরা।
প্রতিবেশী মোনায়েম আহমদ শাদী জানান, আগামী মাসের ১২ তারিখে নীলার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক ছিল ঢাকার উত্তরার এক ছেলের সাথে।
তিনি আরও জানান, নিহতদের জানাজার সময় এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি কারণ নিহতদের পরিবারের বড় মেয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্যে গিয়েছিলেন তিনি ফিরে এলেই জানাজা ও দাফনের কাজ সম্পন্ন হবে।
শ্রীমঙ্গল থানার এএসআই মুনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সন্ধ্যার পর মরদেহ এসেছে। নিহতের বাড়িতে ফ্রিজার গাড়িতে মরদেহ রাখা হয়েছে।