রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ : অনিয়ম-দুর্নীতির কারখানা



বিজ্ঞাপন

সাদিক তাজিন :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ, গভর্ণিং বডির সভাপতি এবং কয়েক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সর্বমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষী বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ কর্তনের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও স্বজনপ্রীতিসহ মোটা অংকের টাকার বিনিময় শিক্ষক নিযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবোর্ড নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন ফি ৭৫০ টাকা হলেও প্রত্যেকের কাছ থেকে ২৬০০ টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোচিং ফি’র নামে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আরও ১ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ফি আদায়ের কারণে অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থী ফি দিতে না পেরে পরীক্ষা দিতে পারছেনা।

এদিকে প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী নানা প্রজাতির বৃক্ষ কর্তনের বিতর্কিত দরপত্র আহবান করে শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ গভর্ণিং বডির। কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর গাছগুলো বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের সাবেক গভর্ণিং বডির কমিটির সদস্য মইন উদ্দিন। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয় প্রশাসনের অপকর্মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ হিসেবে পুরো জেলায় এই প্রতিষ্ঠানের আলাদা সুনাম রয়েছে। কিন্তু গভর্ণিং বডির সভাপতিরফিকুল ইসলাম সুন্দর, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল বাছিত, ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন ও প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষকের কারণে প্রতিষ্ঠানের সেই সুনাম আজ হারিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল বাছিত বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস টাইমের বাইরে এক্সটা কোচিং করাচ্ছি। এজন্য খরচ কিছুটা বেশি নিচ্ছি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের অবকাটামো উন্নয়নে ছাত্রছাত্রীরা সেচ্ছায় অর্থ দিয়ে অংশগ্রহন করেছে। বৃক্ষ কর্তনের ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য গাছ বিক্রি করা হচ্ছে। বাড়তি ফি আদায়ের ব্যাপারটা আমি শুনেছি।

গভর্ণিং বডির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের অংশ হিসেবে গাছ কেটে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে কয়েকশত গাছের চারা লাগানোর পরিকল্পনাও আমরা গ্রহণ করেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে একটি অপশক্তি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমার ধারনা তারাই আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।

মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা এই ব্যাপারটা জানতাম না। ঘটনা এমন হয়ে থাকলে তদন্ত করে শিঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেট শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বলেন, সরকার নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন ফি ৭৫০ টাকা। এর বাইরে অর্থ গ্রহণের কোন নিয়ম নেই। যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তবে তা অবৈধ।