লাতু ডেস্ক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সম্প্রতি বিজিবির অভিযানে ভারতীয় মহিষ আটকের পর অসাধু একটি চক্র এক বৃদ্ধাকে চাপ প্রয়োগ করে দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিনের ভাইয়ের নাম বলতে বাধ্য করেছে বলে ওই বৃদ্ধা দাবি করেছেন। এমনকি ওইদিন বিজিবি চোরাই মহিষ বলে তার ছেলের পালিত মহিষগুলো নিয়ে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। ওই বৃদ্ধার নাম সোমা বেগম (৭০)। তিনি উপজেলার গজভাগ গ্রামের ছাদু মিয়ার মা। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সোমা বেগম সেদিন মহিষ আটকের প্রকৃত ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
সোমা বেগম বলেন, মুছেগুলে তাদের পুরাতন বাড়ি রয়েছে। গজভাগের নতুন বাড়ি ও মুছেগুলের পুরাতন বাড়িতে তিনি যাওয়া-আসা করেন। ঘটনার দিন গত রোববার বিকেলের দিকে মুছেগুল থেকে খবর পান বেশ কিছু লোক বিজিবি নিয়ে গজভাগের নতুন বাড়ি ঘেরাও করে তার ছেলের পালিত ৪টি মহিষ ভারতীয় চোরাই মহিষ দাবী করে তা আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এই খবর পেয়ে সন্ধ্যায় তিনি গজভাগে ছুটে আসেন। এসময় তার ছেলে ছাদু মিয়া হাওরে ছিলেন।
এসময় তিনি মহিষগুলো নিজের ছেলের দাবী করলেও উপস্থিত লোকজন ও বিজিবি সদস্যরা তা না মেনে তার উপর নানা চাপ প্রয়োগ করতে থাকে দাবি করে সোমা বেগম বলেন, তারা মহিষগুলোর মালিক দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিনের ভাইয়ের বলতে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে বাঁচার জন্য ভয়ে তাদের কথা মতো আমি মহিষগুলো ইউপি চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিনের ভাইয়ের বলেছি। যা সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে মহিষগুলো আমার ছেলের পালিত ছিল। কিন্তু শত্রুতা করে স্থানীয় লোকজন ভারতীয় চোরাই মহিষ বলে বিবিজিকে দিয়ে আটক করে নিয়ে যায়। এতে আমার ছেলের কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৯ আগস্ট রাত ৮টার দিকে বিওসি টিলা বিজিবি সদস্যরা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের পাথারিয়া চা বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬টি ভারতীয় চোরাই মহিষ আটক করে। বিজিবির দাবি, এসময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। তবে স্থানীয় লোকজন জানান, বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গজভাগ গ্রামের ছাদু মিয়ার বাড়ি থেকে ৪টি মহিষ এবং সমনভাগ বাগান এলাকা থেকে আরও দুটি মহিষ আটক করে। এদিকে ছাদু মিয়ার বাড়ি থেকে মহিষ আটকের একটি ভিডিও ধারণ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ছাদু মিয়ার মা সোমা বেগমকে ঘিরে বিজিবি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ আশপাশের লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন। এসময় ছাদু মিয়ার মা সোমা বেগম বলেন, ‘মহিষগুলো এনাম চেয়ারম্যানের ভাই তার বাড়িতে রেখে গেছেন’। তবে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের নাম তিনি বলতে পারেননি। এই ঘটনায় ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সামালোচনার সৃষ্টি হয়।
এদিকে দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন জানিয়েছেন, যেদিন বিজিবি মহিষ আটক করেছে, ওই দিন তার বাবা অসুস্থ হয়ে সিলেট একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার পরিবারের লোকজন তার বাবাকে নিয়ে সিলেটে ছিলেন। তিনি বিজিবির অভিযানে আটক হওয়া মহিষগুলো তার ভাইয়ের নয় দাবি করে বলেন, আমার কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অসৎ উদ্দেশ্যে ‘সম্মানহানি’ করতে বৃদ্ধাকে দিয়ে আমার ভাইয়ের নাম বলতে বাধ্য করেছে।