মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের নয়াবাজার-লালপুর-লংলা চা-বাগান সড়কের স্থানীয় আখালী ছড়ার উপর নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ার আগেই উইং ওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।
এ নিয়ে গত কয়েকদিন থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চলছে নানা সমালোচনা। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
জানা যায়, ২০১৮ সালের রমজানে মনু নদীর ভাঙ্গণে ভয়াবহ বন্যার ফলে ওই ব্রিজটি ভেঙে যায়। একবছর পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুলাউড়ার উদ্যোগে ব্রিজটি পুননির্মাণের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে টেন্ডার আহবান করা হয়। কাজের ব্যয় ধরা হয় মোট ২৭ লক্ষ টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পান মের্সাস কামরুল হাসান বখশ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব নেন সাব-ঠিকাদার রুবেল আহমদ। বর্তমানে তিনি ব্রিজের কাজটি করছেন।
এখন পর্যন্ত ব্রিজের সিংহভাগই কাজই শেষ হয়েছে। কিন্তু দুই/তিন আগে ব্রিজের সংযুক্ত সড়কে মাটি ভরাটের সময় ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বের ভিমের সঙ্গে সংযুক্ত উইং ওয়ালে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের ফাটল। এবং দক্ষিণ পার্শ্বে উইং ওয়ালেও দেখা দিয়েছে ফাটল। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী কাজের মান নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেছেন।
সরেজমিন টিলাগাঁও ইউনিয়নের লালপুর এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে আলাপ করলে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ সহস্রাধিক মানুষ, লংলা চা-বাগান ও তারাপাশা চা-বাগানের আশেপাশের এলাকার ভারী যানবাহন নিয়মিত চলাচল করতো। ব্রিজটির নির্মাণ কাজের কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডাইভারশন না দেয়ায় বিকল্প সড়ক দিয়ে একবছর থেকে যান চলাচল অব্যাহত থাকে। ফলে বছর খানেক থেকে স্থানীয় এলাকাবাসীরা নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয় লালপুর এলাকার বাসিন্দা উম্মর আলী, ইউনুছ আলী, শফিক মিয়া, ইনসান মিয়া, রফিক মিয়াসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ভোগান্তির পর নির্মিত এই ব্রিজটির কাজ শেষ হলেও যানবাহন চলাচলের আগেই ফাটল দেখা দেয়ায় কাজের মান নিয়ে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। ব্রিজের কাজে রড ব্যবহারেও কারসাজি করা হয়েছে। কাজের মান নিয়ে আমরা ঠিকাদারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে বলেন ম্যানুয়েল অনুযায়ী কাজ চলছে। ব্রিজটির কাজ মানসম্মতভাবে সমাপ্তের দাবি জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।
কার্যসম্পাদনকারী সাব-ঠিকাদার রুবেল আহমদ বলেন, ব্রিজের পাশে এক্সেলেটর দিয়ে মাটি ভরাট করতে গিয়ে একটি ফাটল দেখা দেয়। কিন্তু স্থানীয় এলাকাবাসী ছেনি ও হাতুড়ি দিয়ে ফাটাকৃত জায়গাটি বড় করে দেন।
কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মু. ইসতিয়াক হাসান বলেন, এক্সেলেটর দিয়ে মাটি ভরাট করতে গিয়ে ব্রিজের উইং ওয়ালে ধাক্কা দেয়ায় ফাটা দেখা দেয়। ঠিকাদার নিজ খরচে তা মেরামত করে দিতে বাধ্য। সঠিকভাবে কাজ সমাপ্ত না করলে কাজের বিল প্রদান করা হবে না।