আন্তঃনগর ট্রেনে সুলতান আসছে এমন খবর চাউর হলে তার সমর্থক ও বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীরা জড়ো হন রেলওয়ে স্টেশনে। সোমবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত ট্রেনে সুলতান মনসুর পৌঁছান নিজ জন্মস্থান মৌলভীবাজার-২ সংসদীয় এলাকা কুলাউড়ায়। স্টেশনে পৌঁছা মাত্র হাজার হাজার সুলতান সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা ধানের শীষ হাতে ঘিরে ফেলে তাকে। সেখান থেকে বের হয়ে কুলাউড়া শহরের চৌমুহনী এলাকা হয়ে উত্তরবাজার প্রধান সড়ক অতিক্রম করে কুলাউড়াস্থ নিজ বাসায় যান। সেখানে নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অন্যতম শীর্ষ নেতা ও সাবেক ডাকসু ভিপি এবং সাবেক সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেন- আজকে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। আজকে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। কারণ মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বরে আমাদের জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডিসহ ২০ দলীয় জোট একত্র হয়েছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলনে। ৪ দফার ১১ দাবি নিয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা। সেখানে সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি অন্যতম প্রধান দাবি। উনাকে মাত্র ২ কোটি টাকার জন্য আটকে রাখা হয়েছে। যেখানে কারাগার নাই, একটি পরিত্যক্ত ঘরে তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। অথচ সেই টাকার কয়েক গুণ বেশী টাকা ব্যাংকে জমা আছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের এই সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য লড়াই করছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা, সংবিধান প্রণেতা, বিজ্ঞ আইনজীবি ড. কামাল হোসেন।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, যদি আপনারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র চান, আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দিব এই পরিবেশ যারা চান, গুম হত্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য, মুক্তি পাওয়ার জন্য আজ আপনাদের এক হতে হবে। কুলাউড়ার ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সকল মা-বোনদের কাছে আমাদের এই তথ্য পৌঁছে দিতে আপনারা কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ধানের শীষ বাংলাদেশের মানুষের অতি পরিচিত একটি মার্কা তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ এই মার্কায় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন সদস্য হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসাবে আমি আপনাদের আহবান জানাবো, আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে সকল দল, মত, পথের সকলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করি।
এর আগে তাঁর আগমন উপলক্ষ্যে সকাল ১১টা থেকে ঐক্যফন্টের শরীক বিএনপি এবং সুলতান মনসুরের সমর্থকরা কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন ও তার আশেপাশে অবস্থান করে। আর অন্যদিকে যাতে তারা সভা-সমাবেশ, মিছিল করতে না পারে এবং কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ তৎপর ভূমিকা পালন করে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ শহরের প্রধান সড়কসহ কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত শো-ডাউন প্রদর্শন করে।
কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন- নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে এখন কোন প্রার্থী সভা, সমাবেশ, মিছিল করতে পারবে না। তাছাড়া সুলতান মনসুরের আগমন উপলক্ষ্যে যাতে নেতাকর্মীরা কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পুলিশ তৎপর আছে।