নিজস্ব প্রতিবেদক::মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক নারীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে স্বর্ণালংকারসহ ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ধার করে নেওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাওয়ায় উল্টো ওই নারী ও তার বাবা-ভাই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। এতে ব্যবসায়ী মাহমুদ হোসেন মামুন ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্ত্রী সুরাইয়া রহমান তমা বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ কমলাবাড়ি এলাকার সাহাবুল ইসলামের মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা হুছনা আক্তার সেলিনা, তাঁর ভাই কাওছার আহমদ, বাবা সাহাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডি পুলিশ মৌলভীবাজারকে তদন্ত করে পরবর্তী ধার্য তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল জেলার বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন মামুন প্রায় চার বছর ধরে পরিবার নিয়ে বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বাজার এলাকায় ‘রসমেলা’ নামের একটি মিষ্টির দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন। এ সময় হুছনা আক্তার সেলিনা বিভিন্ন সময় মামুনের দোকান থেকে পণ্য কিনতেন। এতে মামুন ও তার পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন সেলিনা। পরে ওই সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে নানা অজুহাতে মামুনের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে থাকেন। মামলার এজাহার অনুযায়ী, সেলিনা প্রথমে ধার করা কিছু টাকা ফেরত দিয়ে মামুন ও তার স্ত্রীর আস্থা অর্জন করেন। পরবর্তীতে স্বামীর চিকিৎসার খরচ মেটানো কথা বলে ২ লাখ টাকা নেন এবং কথা দেন জায়গা বিক্রির টাকা হাতে পেলেই ফেরত দেবেন। পরে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাদীর মেয়ের প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের এক ভরি স্বর্ণের চেইন নেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে দোকানের মালামাল ও নগদ মিলে আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা তাদের কাছ থেকে নেন।
এজাহারে বলা হয়, ব্যবসায়ী মাহমুদ হোসেন মামুন ধার করা টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে সেলিনা উল্টো কু-প্রস্তাব দেন। মামুন তার প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদের দাম্পত্য জীবনে ভাঙন ধরানোর হুমকি দেন। এরপর সেলিনা তার ভাই কাওছার আহমদ ও বাবা সাহাবুল ইসলামসহ কয়েকজনকে নিয়ে ব্যবসায়ী মামুনের দোকানে এসে ৭০ হাজার টাকার মালামাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যান। সর্বশেষে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে তারা দোকানে গিয়ে মামুনের কাছে প্রকাশ্যে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তারা হুমকি দিয়ে বলেন, তুমি (ব্যবসায়ী মামুন) এ এলাকায় বহিরাগত। এখানে ব্যবসা করতে হলে আমাদের ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, নইলে ব্যবসা করতে দেব না। এমনকি চাঁদা না দিলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াবে।
বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রিপন আহমদ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডি পুলিশ মৌলভীবাজারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।