এ.জে লাভলু:: রেজাউল করিম খন্দকার নিজের বাড়ির পাশেই গড়ে তুলেছেন এক ফলবাগান। শখ করে ফল গাছ লাগানো শুরু করেছিলেন প্রায় প্রায় ৮ বছর আগে। প্রথমে আম দিয়ে শুরু করেন। পরে একে একে কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, জামরুল, ডালিম, কাঁঠাল, ড্রাগন ফল, ত্বীন, স্ট্রবেরিসহ দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফলের গাছ যুক্ত করেন। এখন তাঁর বাগানে রয়েছে নানা জাতের দেশি-বিদেশি ফল।
রেজাউলের বাড়ি বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের অফিসবাজার এলাকায়। সম্প্রতি তাঁর বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, গাছে গাছে আমসহ ঝুলছে নানা জাতের ফল। যেন একটুকরো সবুজ স্বপ্নের বাগান। সযত্নে তিনি তা পরিচর্যা করছেন। প্রতিটি গাছে ফলের নাম ও জাত লেখা রয়েছে।
রেজাউল করিম খন্দকার জানান, তিনি একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। চাকরির পাশাপাশি শখের বসে ২০১৭ সালে বাড়ির পাশে একটি টিলায় আম গাছ রোপন করেন। এতে ফল ভালো হওয়ায় পরিবারের চাহিদা মিটাতে আরও বিভিন্ন জাতের ফল গাছ লাগানো শুরু করেন। ফলন হওয়ায় ফলের প্রতি তার আগ্রহ বাড়তে থাকে। পরে তিনি দেশের পাশাপাশি বিদেশ থেকে ফল গাছ এনে রোপন শুরু করেন। বর্তমানে একর জায়গা জুড়ে এসব গাছ লাগানো হয়েছে।
শৌখিন এই ফলচাষী জানান, এখন তার বাগানে রয়েছে দেশি-বিদেশী জাতের ফলের মধ্যে ৫০ জাতের আম গাছ রয়েছে। ১০ জাতের কমলা ও মালটা গাছ রয়েছে এবং ৭ জাতের আঙুরের গাছ রয়েছে। দেশি-বিদেশি অন্যান্য ফলের মধ্যে রয়েছে আনার, ফুলে আরাকতা, মৃদুলা, আপেল, পারসিমন, নাশপাতি, ড্রাগন ফল, তিন ফল, ব্ল্যাকবেরি, লুকাট ফল, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, রামবুটান, সালাক ফল, জামরুল, গোলাপজাম, তুরকী মালবেরি, লেবু, আঙুর, কাজুবাদাম, ফিলিপাইন আখ, আতাফল, শরিফা ও পেপে।
রেজাউল জানান, আম গাছের মধ্যে রয়েছে-আলফানসো, আমেরিকান কেন্ট, হিমসাগর, চেংমাই, পাকিস্তানি চোষা, আমেরিকা পালমা, সামার বেহেশ্ত, সূর্য ডিম (নাচ-১, নাচ-২, নাচ-৩), বৈশাখী, বান্দি নুড়ি, গৌরমতি, কটিমন, থাই কাছা মিঠা, কুনাই, বাউ-৩, বারি-১১, নাম ডাক মাই, হাড়িভাঙা, ব্ল্যাকস্টোন, মহাচনক, কিউজাই, ব্রুনাই কিং, ব্যানানা, আম্রপালি, সুপার ভাগোয়া ও পাকিস্তানি জাতের আম গাছ। কমলা ও মালটার রয়েছে-হানিডিউ, কমলা তারাক্ক, রুপি গ্রেপ, কারা কারা অরেঞ্জ, ওয়াশিংটন নেভাল, হেয়ার লুম নেভাল, সাউথ আফ্রিকান হলুম মালটা, চায়না কমলা, সিলেটি কমলা ও থাই-২। আঙুরের মধ্যে রয়েছে-আঙুর গ্রীল লং, এলিস, ফ্যান্টাসি, বাইকুলুর, জয়, ভিতুবি ব্ল্যাক ও এবিউ জায়ান্ট। চেরি ও পিচের মধ্যে রয়েছে আফ্রিকান রেড পিচ, সাবান চেরি ও ব্ল্যাক সুরিনাম চেরি। লংগানের জাতগুলো হলো আরকা পেয়ারা, ম্যাটোয়া লংগান, সিজন লংগান টাকা, জাম্ব লংগান, থাই লংগান, পিংপং লংগান, পিং পিংপং লংগান, রেড পিংপং ও রেড ক্রিস্টাল।
রেজাউল করিম খন্দকার বলেন, গত কয়েক বছর আমের ভালো ফলন হয়েছে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করেছি। পাশাপাশি আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকেও দিয়েছি। এবছর আম বিক্রি করতে পারেননি। তবে এবার চার শতক জমিতে বিক্রির উদ্দেশ্যে আঙুর চাষ করেছেন। আশা করছেন ফলন ভালো হবে।
বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, রেজাউল করিম খন্দকার একজন শৌখিন কৃষক এবং উদ্যোমী কৃষি উদ্যোক্তা। আমি তার ফলের বাগানে কয়েকবার গিয়েছি। বাগানে দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফলের গাছ লাগানো দেখে ফলচাষ বাণিজ্যিকভাবে সম্প্রসারিত করার জন্য তাকে উৎসাহ দিয়েছি।