নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের সরকারি খাল ও বালু মহাল ‘দেওছড়া’ দীর্ঘদিন ধরে জবর-দখল ও ভরাট হওয়ার কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানি নামলেই তলিয়ে যাচ্ছে অফিসবাজারের অলি-গলি, দোকানপাট ও রাস্তাঘাট। এতে ভাঙনের মুখে পড়েছে অফিসবাজার-সাবাজপুর এলজিইডি রাস্তাটি। এবার মৌসুমের শুরুতেই দুই দফা এলাকা প্লাবিত হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া খাল সংলগ্ন রাস্তাটি পাহাড়ি ঢলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে সাবাজপুর চা বাগানের উৎপাদিত চা ও মালামাল পরিবহন। এলাকাবাসী সরকারি এ খালটির পুন:খনন ও অবৈধ দখলকৃত ভূমি উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের অফিসবাজার ও সাবাজপুর চা বাগানের পূর্বাঞ্চলের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পানি চা বাগানে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা অফিসবাজার-সাবাজপুর চা বাগান এলজিইডি রাস্তার পাশ দিয়ে প্রবাহিত দেওছড়া খাল দিয়ে নিজবাহাদুর এলাকায় সরকারি খালে নিষ্কাষিত হয়। এ ছড়ার প্রায় তিন কিলোমিটার স্থানের উভয়পাশের ভূমি মালিকরা খালের বেশিরভাগ অংশ ভরাট করে কেউ লাগিয়েছেন বাঁশঝাড়, কেউবা লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। ম্যাপ অনুযায়ী খালটির চওড়া ২০ থেকে ২৫ ফুট হলেও এখন কোনো কোনো স্থানে নেই ১০ ফুটও। উজানের পানি নেমে অফিসবাজারের উত্তর পাশের সড়ক ও জনপথের ব্রিজের নিচ দিয়েও প্রবাহিত হয়। কিন্তু প্রভাবশালীরা এই ব্রিজের মুখ বন্ধ করে দোকানপাট নির্মাণ করেছেন। এতে পানি নিষ্কাষন বাধাগ্রস্থ হওয়ায় খাল সংলগ্ন রাস্তা ও বাজারের রাস্তার উপর দিয়ে ঢলের পানি প্রবাহিত হয়। ফলে প্রতি বছর ৫ থেকে ১০ বার পর্যন্ত খালের উভয় পারের বাসিন্দারা ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে। গত বুধবারের ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় চা বাগানের রাস্তা ও অফিসবাজারের অর্ধশতাধিক দোকানপাট। যার ফলে অফিসবাজার-সাবাজপুর এলজিইডি রাস্তায় ভেঙে যাচ্ছে।
সাবাজপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক নাহিদ ফেরদৌস জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টপাতে সাবাজপুর বাগান হতে অফিসবাজার পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্ট তলিয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় খালের তীর ধসে পড়ে রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাগান কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটি সংস্কার করলেও খনন আর দখলমুক্ত না করায় তা কোনো কাজে আসে না।
অফিসবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা আব্দুল কুদ্দুস স্বপন ও সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান, দেওছড়া খালটি ভরাট ও অবৈধ দখলের কারণে খালের উভয় পারের কয়েকটি গ্রামের মানুষজন ও অফিসবাজারের ব্যবসায়িরা মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বাজারের উত্তর পাশের ব্রিজের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় খালের পানি নিষ্কাষিত হতে পারে না। রাস্তা ও বাজারের উপর দিয়ে পানি নামতে গিয়ে লোকজন ও ব্যবসায়িদের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। দেওছড়া খাল পুন:খনন ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবি জানান তারা।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার জানান, বিষয়টি কেউ তাকে জানাননি। তবে, এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।