নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উজ্জল বিশ্বাস (৩০) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তার স্ত্রী দিপনা রাণী বিশ্বাস (১৯) ও ছোটভাই জন্টু বিশ্বাস।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি গ্রহণের পর বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ তাদের কারাগারে পাঠায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, উজ্জল বিশ্বাস হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তার স্ত্রী দিপনা রাণী বিশ্বাস ও ছোটভাই জন্টু বিশ্বাস। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা বলেছেন, দিপনা রাণী ও তার দেবর জন্টুর মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। এতে উজ্জল তাদের পথের কাটা ছিলেন। তাই তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার রাতে উজ্জলের স্ত্রী তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। এতে উজ্জল গভীর ঘুমে ছিলেন। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় উজ্জলকে স্ত্রী ও তার ছোটভাই মিলে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ বাড়ি থেকে কিছু দূরে রাস্তার পাশে ফেলে দেন।
জানা গেছে, উজ্জল বিশ্বাসের স্ত্রী দিপনা রাণী বিশ্বাসের সঙ্গে তার আপন ছোটভাই জন্টু বিশ্বাসের পরিকয়া চলছিল। বিষয়টি জেনে ফেলেন দিপনার স্বামী উজ্জল। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী দিপনা ও ছোটভাই জন্টু। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রোববার রাত দুইটা থেকে তিনটার মধ্যে দিপনা ও জন্টু ঘুমন্ত অবস্থায় উজ্জল বিশ্বাসের গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। পরে লাশ বাড়ি থেকে নিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। রাতে বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বজনরা উজ্জলকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ভোরের দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে উজ্জলের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্ত্রী দিপনা রাণী বিশ্বাস ও ছোটভাই ঝন্টু বিশ্বাসকে আটক করে। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) কামরুল হাসান ও বড়লেখা থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম। নিহত উজ্জল তালিমপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের সুবোধ বিশ্বাসের ছেলে। এই ঘটনায় সোমবার রাতে উজ্জলের বাবা তার স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।