সিলেট ডেস্ক:: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির সমর্থনে আজ রোববার সিলেটের গোলাপগঞ্জে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিজিবি, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুদর্শন সেন।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে দুজনের মরদেহ আনা হয়েছিল। পরে তাঁরা নিয়ে গেছে। এদের মধ্যে একজন হলেন—ধারাবাহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩)। অপর নিহতের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি।’
তবে স্থানীয় ভাবে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে নিহত অপর দুজন হলেন—উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮) ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্ত গ্রামের নাজমুল ইসলাম। তিনি ঢাকা দক্ষিণ বাজারের তানজিনা সু’র মালিক। নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর বাবা তৈয়ব আলী। আর সানির মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শাহিনুর ইসলাম।
সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, ‘গোলাপগঞ্জে সংঘর্ষ হচ্ছে। কয়েক জনের মৃত্যুর খবর বিভিন্নভাবে শুনেছি। তবে কেউ নিশ্চিত করেনি। ওরা থানায় হামলার চেষ্টা করেছিল, পারেনি।’
রোববার সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, বিজিবিসহ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে অন্তত ১০-১৫ জন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালনে আজ বেলা ১১টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ বাজারে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ বিজিবির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধলে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষ প্রায় ৩ ঘণ্টা টানা চলে। এ সময় শিক্ষার্থীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও আহত হন। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ সংঘর্ষে একপর্যায়ে পুলিশকে ধাওয়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা দক্ষিণ গোলাপগঞ্জ রোডের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নিয়ে আসলে সেখানে পুলিশের গুলিতে তাজ উদ্দিন, সানি ও নাজমুল নিহত হন।
পরে আন্দোলন কারীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী শিক্ষার্থীরা দখল করে মিছিল চলছে। এ সংঘর্ষে অনেকে আহত এবং গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এদিকে সিলেট নগরে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় আহতের বিষয়ে বিকেল তিনটা ৪০ মিনিটে সিলেট এম এজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ২৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে একজন গুরুতর আহত রয়েছেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ বেড়েছে।’