খন্দকার সাহেদ হাসান:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা বাজার থেকে কাঠালতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তাটি নির্মাণে এ অত্যন্ত নিম্নমানের নাম্বারবিহীন ইট ও মাটিযুক্ত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ১০ মে (২০২৩ইং) বুধবার সরেজমিন গিয়ে রাস্তার অনিয়মের সত্যতাও মিলেছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বড়লেখা বাজার থেকে কাঠালতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং কাজের অনুকূলে ১ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিয়া অ্যান্ড আফিয়া এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার ও যুবলীগ নেতা ফাহিম আহমদ।
স্থানীয়রা বলেন, এই রাস্তার কাজ তদারকিতে বড়লেখা উপজেলার এলজিডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে বলেও অভিযোগ করেন। এ প্রকল্পের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালি দিয়ে বক্স না করেই নিম্নমানের ইট খোয়াসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে রাস্তায়। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অনিয়মের অভিযোগের পর কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলেও এখনও অনিয়মের মাধ্যমে কাজ দিয়েই ওই কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার ও যুবলীগ নেতা ফাহিম আহমদ।
এ রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙে পানিতে যাচ্ছে সরকারি টাকা। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে এসব সড়ক। ফলে সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের ফলে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এলাকাবাসীদের।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বড়লেখা-কাঠালতলী সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হচ্ছে। বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে তার ওপর নিম্নমানের পুরোনো ইটের খোয়া ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিম্নমানের ইটের ভাঙা অংশ রাবিশ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। পুরোনো সড়কের পিচ না উঠিয়ে তার উপরই নতুন কাজ করা হচ্ছে। এতেও নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার কাজে স্থানীয় স্থানীয় সরকার প্রকৗশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাউকে এসে তদারকি করতে দেখা যায়নি। অথচ ইটে পা দিয়ে চাপ দিলে তা ভেঙে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় রহিম উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার কথা বললেও কোনো তোয়াক্কা না করে অনুমোদন বিহীন নিম্নমানের বালি ও কংক্রিট দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযুক্ত ঠিকাদার ফাহিম আহমদ অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমার কাজ ভালো হচ্ছে। এ কাজ এলজিইডিই বুঝে নেবে। তাদেরকে আমিই বুঝিয়ে দেব।
এলজিইডির বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, উন্নয়ন কাজের চুক্তি মোতাবেক কাজ না হলে ও কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।