নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আবারও বনে আগুন লেগেছে। এবার উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির সীমন্তবর্তী বোবারথল এলাকার বনাঞ্চলে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বোবারথল এলাকায় বনে আগুন লেগে গাছপালা ও লতাগুল্ম পুড়েছে। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) টিলা থেকে ধোয়া উড়তেও দেখা গেছে।
এর আগে চলতি বছরের ৭ মার্চ দুপুরে বড়লেখার সমনভাগ বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মাখালজুড়া ও ধলছড়া এলাকার বনাঞ্চলে আগুন লেগে ১ দশমিক ৮৫ হেক্টর বনভূমির বাঁশ-গাছ ও ঝোপঝাড় পুড়ে যায়। এই ঘটনায় বন বিভাগের সমনভাগ বিটের কর্মকর্তা নুরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। তখন অভিযোগ ওঠে, বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের মদদে উপকারভোগীরা বনায়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে সংরক্ষিত বনে আগুন দিয়েছিলেন। অবশ্য সংশ্লিষ্টরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এদিকে বোবারথলে বনে আগুন লাগার খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন ও বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বনবিভাগের দাবি, বোবারথল সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ড থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে বোবারথল এলাকার প্রায় আধা একর বনভূমির লাতাগুল্ম পুড়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন এই আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন। যার কারণে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
অবশ্য স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আগুনে বোবারথল এলাকার কয়েকটি টিলার বেশ কিছু বনভূমির গাছপালা ও লতাগুল্ম পুড়েছে। এতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যৈর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে বনে বার বার আগুন লাগার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা বলছেন, এভাবে একের পর এক বন আগুনে পুড়তে থাকলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে। বন্যপ্রাণী আবাস্থল হারাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হবে। তাদের অভিযোগ, বনে আগুন লাগার নেপথ্যে বিভিন্ন সময় বনবিভাগের লোকজন ও প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ততা মিলেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো ব্যবস্থা নেননি। যার কারণে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস শনিবার বিকেলে বলেন, বোবারথল সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ড থেকে আগুন লেগে বোবারথল এলাকার আধা একর এলাকা পুড়ে গেছে। এতে সামান্য কিছু লাতাপাতা পুড়েছে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত আগুন নেভানোর কারণে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।