এ.জে লাভলু:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ২৫টি বীর নিবাস নির্মাণের নির্ধারিত মেয়াদ পেরিয়ে গেছে। এই সময়ে মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়া তো দূরের কথা, শুরুই হয়নি। ফলে উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এজন্য সংশ্লিষ্টরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতাকে দায়ী করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বড়লেখা উপজেলার অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য (২য় পর্যায়ে) ২৫টি বীরনিবাস (আবাসন) নির্মাণের জন্য গত বছরে ০৭ এপ্রিল দরপত্র আহবান করা হয়। কাজগুলো পেয়েছে মেসার্স শুভ এন্ড সিয়াম ট্রেডার্স, আখি এন্ড মনি এন্টারপ্রাইজ, হোমায়রা এন্টারপ্রাইজ, সুনজিত দাস ও মেসার্স জুনেদ এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ৬ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ০৫ জানুয়ারির মধ্যে বীরনিবাসের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ পেরিয়ে প্রায় চারমাস হতে চলেছে। অথচ এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো নির্মাণ কাজ শুরু করেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নে ১৩টি, দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে ৪টি, নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নে ৩টি, বড়লেখা সদর ইউনিয়নে ২টি, সুজানগর ইউনিয়নে ২টি, তালিমপুর ইউনিয়নে ১টি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বীরনিবাস দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি বীরনিবাস নির্মাণের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরে দুটি করে বেডরুম ও বাথরুম, একটি ড্রইং রুম, ডাইনিং রুম ও রান্নাঘর, বেলকনি, বিদ্যুৎসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে।
উপকারভোগী আপ্তারুন নেছা, বাবুল আহমদ, নুরুন নেছা, ছালেকা বেগম, রোকেয়া বেগম, নূর উদ্দিন, সামারুন বেগম, কাজন আলী প্রমুখ ক্ষোভ প্রকাশ করে সোমবার দুপুরে বলেন, ‘বীরনিবাস পেলে আমাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে। প্রশাসনের লোকজন ঘরের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে আমাদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকমাস হয়ে গেল। এখনও পর্যন্ত ঘরের কাজ শুরু হয়নি। নাকি আমরা ঘর পাব না।’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন বলেন, যেসকল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বীরনিবাস পাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগের বাড়ি-ঘর খুবই জীর্ণ। প্রায় চার মাস হতে চলেছে। কিন্তু ঘরের কাজ এখনও শুরু হয়নি। এটা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে শুভ এন্ড সিয়াম ট্রেডার্সের ঠিকাদার মুমিন আহমদ ও ঠিকাদার সুনজিত দাস বলেন, ‘ভালো ইট না পাওয়ায় এতদিন কাজ শুরু করিনি। তবে শিগগিরই কাজ শুরু করব।’
মেসার্স জুনেদ এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার জুনেদ আহমদ ও আখি এন্ড মনি এন্টারপ্রাইজের বাকের আহমদ বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর দাম অনেকে বেড়েছে। একটু দাম কমার অপক্ষো করছি। তবে কাজ শিগগিরই শুরু করব।’ হোমায়রা এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার ছায়াদ আহমদও দ্রুত কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়েদ উল্লাহ খান সোমবার দুপুরে বলেন, নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও এখনও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বীরনিবাসের নির্মাণ কাজ শুরু করেনি। নির্মাণকাজ কার্যাদেশ অনুসারে দ্রুত শেষ করতে গত রোববার (০৫ মার্চ) সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরপরও কাজ শেষ না করলে ঠিকাদারীদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী র্কমকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।