রবিবার, ১১ জুন ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



জুড়ির দুই বোন প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে বড়বোন ঝলসে গেছে, ছোটবোন ধর্ষণের শিকার



বিজ্ঞাপন

কুলাউড়া প্রতিনিধি:: মোবাইলফোনে প্রেম হয় তাদের। তারপর দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ঈদের পর দুই কিশোরী বোন তাদের প্রেমিকের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল। প্রেমিকদের পাঠানো সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে দেখা করতে আসেন দুই বোন।

সেখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রেমিকদের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে বড় বোনের প্রেমিক তাকে টিলার ওপর থেকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেন। এ সময় বিদ্যুতের লাইনে জড়িয়ে কিশোরীর শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়।

আর ছোট বোনের প্রেমিক তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই দুই কিশোরীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায়। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার জুড়ী থানায় অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই কিশোরীর একজনের বয়স ১৫ ও অপরজনের বয়স ১৩। তাদের বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। সম্প্রতি মুঠোফোনের মাধ্যমে দুই কিশোরীর সঙ্গে রাসেল ও জীবন নামের তরুণের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রাসেলের বাড়ি জুড়ী উপজেলার চাটেরা এবং জীবনের বাড়ি বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নে।

তারা ৭ মে দুই কিশোরীকে বেড়ানোর কথা বলে পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের রঙ্গীরকুল এলাকায় একটি নির্জন টিলায় নিয়ে যান। সেখানে রাসেল তার প্রেমিকাকে কু-প্রস্তাব দিলে সে তা প্রত্যাখ্যান করে। একপর্যায়ে রাসেল প্রেমিকাকে তাকে ধাক্কা মারেন। এতে প্রেমিকা গড়িয়ে নিচে পড়ে যায়। এ সময় বিদ্যুতের লাইনে জড়িয়ে তার পিঠ, বুক ও পেট ঝলসে যায়।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টের সময় বিকট শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে ঘটনার পর রাসেল ও জীবন কিশোরীর ছোট বোনকে নিয়ে সটকে পড়েন। ওই কিশোরীর নিখোঁজের ব্যাপারে তার বাবা গত রোববার (০৮ মে) জুড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার পর জীবন কিশোরীর ছোট বোনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সিলেট নগরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ৮ মে রাতে জীবন তাকে জুড়ী উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই চত্বরে একা ফেলে রেখে চলে যান।

খবর পেয়ে স্বজনেরা গিয়ে তাকে নিয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে মৌলভীবাজারের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। কিশোরীদের বাবা (৫০) বাদী হয়ে মামলা করেন।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ওই দুই প্রেমিককে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।