মৌলভীবাজারের জুড়ীতে অটোরিকশা পরিবহন শ্রমিকদের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার মদিনা কমিউনিটি সেন্টারে সংগঠনের জেলা সভাপতি পাবেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে জেলা অটো টেম্পু, সিএনজি, মিশুক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ২৩৫৯ এর অন্তর্গত জুড়ী উপজেলা শাখার সাধারণ সভা উপজেলার মদিনা কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সংগঠনের জেলা সভাপতি পাবেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম উপস্থিত ছিলেন। সভার একপর্যায়ে শ্রমিকদের একটি পক্ষ নির্বাচনের দাবি তোলেন এবং তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় উপজেলা সভাপতি মতিউর রহমান চুনু টেবিলের উপর থাবা মারলে তার সমর্থকরা সেখানে হট্টগোল শুরু করে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান রুহুল ইসলাম, জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস প্রমুখ ঘটনাস্থলে হাজির গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংগঠনের জেলা সভাপতি পাবেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম দুর্গাপুজার পর জুড়ী উপজেলা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জেলা নেতৃবৃন্দ বার বার চলে যেতে চাইলে শ্রমিকরা তাঁদের যেতে দেয়নি।
উপজেলার শিশু পার্ক স্ট্যান্ড সিএনজি কমিটির সভাপতি বদরুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি আব্দুস সহিদসহ সিএনজি শ্রমিকগণ অভিযোগ করে বলেন, ২০০৪ সালে জুড়ী উপজেলা গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৬/১৭ বছরেও জুড়ী উপজেলা কমিটির নির্বাচন দেওয়া হয়নি। স্থানীয় শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষা করে জেলা নেতৃবৃন্দ রহস্যজনক কারণে প্যাডের মাধ্যমে বারবার কমিটি ঘোষণা দেন। দীর্ঘদিন থেকে আমরা টাকা পয়সার কোনো হিসাব পাইনি। উপজেলা সভাপতি মতিউর রহমান চুনু কোনো হিসাব দেয়াতো দূরের কথা উপরন্তু বিভিন্ন শ্রমিক দিয়ে মারামারি লাগিয়ে টাকা আত্নসাৎ করে আসছেন। তিনি জুড়ীর সিএনজি অঙ্গনে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রামরাজত্ব কায়েম করছেন। আজ (মঙ্গলবার) জেলা সভাপতি ও সম্পাদকের উপস্থিতিতে সাধারণ সভায় চুনু তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তার নামে শ্লোগান দেওয়ান। অপরদিকে সাধারণ শ্রমিকরা নির্বাচনের দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে চুনু টেবিলের উপর থাবা মারলে তার সমর্থকরা সেখানে হট্টগোল শুরু করে।
সংগঠনের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুক মিয়া বলেন, সভায় কিছুটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল পরে তা শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের উপজেলা সভাপতি মতিউর রহমান চুনুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগর চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করে সংযোগ কেটে দেন। জানতে চাইলে সংগঠনের জেলা সভাপতি পাবেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা কল ধরেননি।