হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৯টি দোকান পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। এতে দোকানগুলোর যাবতীয় জিনিসপত্র পুড়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার পাহাড়পুর বাজারের ব্যবসায়ী বিষ্ণুপদ দাসের মালিকাধীন একটি জালের দোকান থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়পুর বাজারের ব্যবসায়ী বিষ্ণুপদ দাসের মালিকাধীন দোকানটি বন্ধ থাকায় কেউই অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি বুঝতে পারেননি। আগুন দ্রুত আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। এই এলাকায় জাল ও কাপড়ের দোকান বেশি হওয়ায় মুহূর্তেই আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়। স্থানীয় লোকজন পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় কেউ কাছে যেতে পারেননি।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেয়া হয়। দুর্গম হাওর এলাকার পাহাড়পুর বাজারে প্রায় ৪ ঘণ্টায়ও পৌঁছাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা। ছোট পাওয়ার পাম্প মেশিন লাগিয়ে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন। এর কিছু সময় পর নবীগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। আগুন নেভানো সম্ভব হলেও নিঃস্ব হয়ে যান ৩৯টি দোকানের ব্যবসায়ী। দোকান থেকে তারা কিছুই বের করতে পারেননি।
পাহাড়পুর বাজারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে রয়েছে- গোপাল দাসের জালের দোকান, শিবু দাসের ঢেউ টিনের দোকান, জগদীশ বৈষ্ণবের কাপড়ের দোকান, মনু দাসের চালের দোকান, সুবল দাসের কাপড়ের দোকান, সুকুমার দাসের কাপড়ের দোকান, বিধান দাসের কাপড়ের দোকান, বিন্দু চন্দ্র দাসের কাপড়ের দোকান, সত্যেন্দ্র দাসের মুদি দোকান, ব্রজেন্দ্র দাসের অ্যালুমিনিয়ামের দোকান, বিশ্ব দাসের মাতৃভান্ডার, হরিদাসের জনতা স্টোর, বীরেন্দ্র দাসের কারেন্ট জালের দোকান, রাতুল তালুকদারের দোকান, পৃথিশ বৈষ্ণবের মুদি দোকান, রণ বৈষ্ণবের কাপড়ের দোকান, জয়হরি দাসের কাপড়ের দোকান, কবিন্দ্র দাসের কাপড় ও জালের দোকান।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার দাস এবং আজমিরীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হানিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার দাস জানান, অগ্নিকাণ্ডে ৩৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।