মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন ও স্টাফদের কলোনিতে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির জন্য হাহাকার শুরু করেছেন কলোনিতে বসবাসরত রেলওয়ে স্টাফরা। সরেজমিন দেখা গেছে, স্টেশনের পানি সরবরাহের একমাত্র পাম্পটি বহু পুরাতন। ঘন ঘন সেটি নষ্ট হওয়ায় তা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ বারবার পাম্পটি মেরামত করে সচল করলেও আগের মতো পানি উত্তোলন করতে না পারায় স্টেশনের ভেতর পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনসহ কলোনিতে বসবাসরত কয়েকশ’ পরিবারকে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের পরিজনদের নিয়ে। স্টেশনে যাতায়াতরত যাত্রীরা অনেক সময় টয়েলেটে গিয়ে পানির জন্য বেকায়দায় পড়তেও দেখা যায়। কলোনিতে বসবাসরত অনেকে ড্রেনের মধ্য দিয়ে যাওয়া পানির লাইন থেকে পানির চাহিদা মেটানোর জন্য পাইপ ফুটো হয়ে বের হওয়া পানি সংগ্রহ করে তা ব্যবহার করছেন।
কিন্তু এ ড্রেন দিয়ে পাশাপাশি বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকের মলমূত্র প্রতিদিন গড়িয়ে যাচ্ছে। এদিকে গরমে পানির অভাবে গোসল, রান্নাবান্না, খাওয়া-ধাওয়া হাঁড়ি-পাতিল ধোয়া, বাথরুমের পানি ও কাপড়-চোপড় ধোয়া নিয়ে কলোনী এলাকায় এক অশ্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত একজন স্টাফ জানান, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এক মাসের উপরে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেক কষ্টে মানবেতর দিন পার করতে হচ্ছে তাদেরকে। পানির পাম্প নষ্ট (বিকল) হওয়ার পর কয়েক বার মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু আগের মতো সেই পাম্প পানি উত্তোলন করতে পারছে না। মেরামত করা এই পানির পাম্প সারাদিনে একবার পানি সরবরাহ করলে ১ কলস পানিও আমরা তুলতে পারি না। দ্রুত এই পানির পাম্প মেরামত করার জোর দাবি জানান তিনি।
কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মুহিবুর রহমান মুহিব জানান, পানির সংকট থাকায় আমাদের নানা সমস্যা পড়তে হচ্ছে। প্রায় এক মাসের উপরে পানির পাম্প বিকল থাকায় পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় স্টেশন পরিচালনায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বারবার অবগত করার পরও এখনো স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না।
এ বিষয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) জুয়েল হোসাইন বলেন, পানির পাম্প মেরামত বা সরবরাহের কাজ আমার বিভাগের দায়িত্বে নয়। তাই আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। এই সমস্যা ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার ও পানির সরবরাহ বিভাগ দেখভাল করে, তারা এ বিষয় নিয়ে ভালো বলতে পারবে। রেলওয়েতে ১১টি বিভাগ রয়েছে। আমার বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে বাসা-বাড়ি নির্মাণ ও মেরামত কাজ দেখভাল করা।
এ ব্যাপারে সিলেট অফিসে কর্মরত ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আসাদ উদদৌলাহ জানান, পানির পাম্প অনেক আগে নষ্ট ছিল কিন্তু এখন তা সচল আছে। এবং পানি উত্তোলনের কাজ চলছে।