মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ‘পিডিবির গাফিলতিতে’ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন দুইজন। আজ রবিবার (১৬ আগস্ট) উপজেলার পৃথক স্থানে দুর্ঘটনায় ওই দুইজনের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, রোববার বিকেলে জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের পাতিলাসাঙ্গন গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে হোসাইন (১৪) একটি ডাহুক পাখি দেখতে পেয়ে বাড়ির পাশের ডোবায় নামে। ওই ডোবার পানিতে আগে থেকে পিডিবি’র বৈদ্যুতিক তার ফেলা ছিল। ডোবায় নামার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় হোসাইন। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৭/৮ দিন ধরে ওই বৈদ্যুতিক তার পানিতে ফেলে রাখা ছিল। কর্তৃপক্ষকে বারা বার জানানোর পরও তারা কেউ এটি মেরামত করতে আসেনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিন বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। গত ৭ থেকে ৮ দিন ধরে বিদ্যুতের তার পানির মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কর্তৃপক্ষকে অনেকবার জানিয়েছি। কিন্তু তাদের কেনো সাড়া মেলেনি।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আহাদ বলেন, ‘ওয়াপদা কর্তৃপক্ষকে আমরা বার বার জানিয়েছি। তারা কোনো পাত্তাই দেয় না। আর আমাদের এখানে বিদ্যুতের তারগুলো হাতের নাগালে। যেকোনো সময় আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনছারুল কবীর শামীম বলেন, ‘বিদ্যুতের তার ছিড়ে পানিতে পড়ে আছে এ রকম কোনো ধরণের অভিযোগ পাইনি। নতুন একটা প্রকল্পের আওতায় পুরোনো লাইনগুলো মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে।’
অন্যদিকে একই উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নে রবিবার দুপুর ১২টার দিকে টিনের ঘরে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম ওয়াহিদ আলী (৫০)। তিনি বিরইনতলা গ্রামের হবিব উল্লাহ’র ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমতিয়াজ গফুর মারুফ রোববার সন্ধ্যায় মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওয়াহিদ আলী একজন দিনমজুর। তিনি দুপুরে স্থানীয় বাজারে একটি টিনের ঘর মেরামত করছিলেন। আর টিনে বিদ্যুতের উন্মুক্ত তার ছিল। কাজ শুরুর সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তিনি কাজ শুরু করেন। পরে বিদ্যুৎ আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। সেখান থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ইউপি সদস্য ইমতিয়াজ গফুর মারুফ অভিযোগ করে বলেন, ‘এক ঘর থেকে আরেক ঘরে এভাবে উন্মুক্ত তার নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কারণে এ রকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজে আসেনি। কোনো অভিযোগ দিলে তারা আসেন না।’
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘এটি দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা দেখছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।