হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রেজার দখলে থাকা ১৪ একর সরকারি জায়গা উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান খানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে দখলকৃত জায়গায় নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনা বন্ধের নির্দেশনা প্রদানসহ সীমানা চিহ্নিত করে দেন।
জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার সুলতানপুর মৌজার ১৪ একর ৪৫ শতক ভূমি ১৯৮৮ সালে ভূমিহীনদের নামে লিজ দেয় উপজেলা ভূমি অফিস। একপর্যায়ে নিরীহ ভূমিহীনদের নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ভূমিসহ কাগজপত্র নিয়ে নেন হুমায়ুন কবীর রেজা। এরপর থেকে ওই জায়গাটি তার দখলে চলে যায়।
এদিকে গত নভেম্বরে জায়গাটি উদ্ধারের জন্য ভূমিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরের লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন কচুয়ারআব্দা গ্রামের জ্যোতিময় দাস। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করে রেকর্ডপত্রাদির আলোকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গত ৩ ডিসেম্বর ডেপুটি কালেক্টর রেভিনিউ (হবিগঞ্জ) ইয়াছিন আরাফাত রানা বানিয়াচং ইউএনও বরাবার পত্র পাঠান।
বৃহস্পতিবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেন। পাশাপাশি তিনদিনের মধ্যে সরকারি ভূমি থেকে সব স্থাপনা নিজ দায়িত্বে সরানোর জন্যও মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন। অন্যথায় প্রশাসনের উদ্যোগে এসব স্থাপনা সরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান খান বলেন, বর্তমানে যিনি এই ভূমিতে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন বা নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ সরকার তাকে লিজ দেয়নি। এই খাস ভূমিতে আশ্রয়ন প্রকল্প বা গুচ্ছ গ্রামের জন্য ওপর মহলে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। বিষয়টি যেহেতু অনেক বড় ডিসি মহোদয়ের মতামত নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও এরমধ্যে সীমানা চিহ্নিত করাসহ অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রেজা বলেন, এই জায়গাটি এখনো ভূমিহীনদের নামেই আছে। আমি শুধু জনস্বার্থে এতিমখানা ও মাদরাসা করে দিয়েছি। সরকারি কোনো ভূমি আমি দখল করে রাখিনি। এসব দেখাশুনা করি আমি।
অভিযোগকারী জ্যোতিময় দাস বলেন, এলাকাবাসীর স্বার্থে জায়গাটি উদ্ধারের জন্য আমি ভূমিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। উপজেলা ভূমি কমিশনার ওই জায়গাটি পরিদর্শন করে তিনদিনের ভেতরে স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইউএনও মামুন খন্দকার বলেন, সরকারি কোনো ভূমিতে ব্যক্তিগতভাবে কেউ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবেন না। প্রকৃত লিজধারীরা যদি ভূমিতে কোনো কিছু না করতে আগ্রহী হন, তাহলে লিজ বাতিল করে দেয়া হবে। আর লিজ হস্তান্তর করার কোনো নিয়ম নেই।