বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

শায়েস্তাগঞ্জে আলোচিত ইতি হত্যাকাণ্ড: বিনামূল্যে আইনি সহায়তায় আশার আলো দেখছে পরিবার
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক



বিজ্ঞাপন

শায়েস্তাগঞ্জের আলোচিত ইতি হত্যাকাণ্ডের আইনি সহায়তা দিচ্ছে ব্র্যাক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কেন্দ্র। হত্যাকাণ্ডের পর গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে ব্র্যাক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচির হবিগঞ্জ সদর-এর কর্মকর্তা মো. খায়রুল আলমের। তিনি ইতির দরিদ্র পরিবারের কাছে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দেন। ইতির পরিবার আইনি সহায়তা নিতে রাজি হলে নিয়মিতভাবে মামলা পরিচালনার যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ব্র্যাক। বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়ে বিচার পাওয়ার বিষয়ে আশার আলো দেখছে ইতির পরিবার।


পারিবারিক সূত্র জানায়, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিরামচর গ্রামের মো. সহিদ মিয়ার ৬ বছরের কন্যা ইতি আক্তার গত বছরের ২৫শে জুলাই সকালে আরবি পড়ার উদ্দেশে বাড়ির পার্শ্ববর্তী আল-ফালাহ জামে মসজিদের মক্তবে যায়। সময়মতো বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ইতি আক্তারের সন্ধান পায়নি। পর দিন উক্ত মসজিদের পাশের জমিতে ইতির লাশ বস্তাবন্দি অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পর ইতির বাবা আবদুস শহীদ বাদী হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

এ হত্যাকাণ্ডের সংবাদ ২৭ জুলাই গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নজর পড়ে ব্র্যাক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচির তৎকালীন হবিগঞ্জ সদর এর কর্মকর্তা মো. খায়রুল আলমের। তিনি উক্ত মামলায় বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য ইতি আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তাদের অনাগ্রহের কারণে তখন আইনি সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে মামলাটি শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ কিছুদিন তদন্তের পর পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু দীর্ঘ দেড় বছরেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ।

পরবর্তীতে বিচার না পাওয়ার হতাশার সংবাদ গত ২ নভেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে শায়েস্তাগঞ্জে মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে বাবা ঘুরছেন পাড়ায় পাড়ায় সংবাদ প্রকাশের পর ব্র্যাক মানবাধিকার কর্মকর্তা মো. খায়রুল আলম নিহত ইতি আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিনামূল্যে আইন সহায়তা প্রদানের জন্য পুনরায় যোগাযোগ করেন। এতে ইতির বাবা মামলার বাদী ব্র্যাকের আইন সহায়তা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে উক্ত মামলা পরিচালনার জন্য ব্র্যাকের পক্ষে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও ব্র্যাকের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট মো. মতিউর রহমানকে নিযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশ প্রশাসনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়।


এ ব্যাপারে ব্র্যাকের জেলা ব্যবস্থাপক মনির হোসেন জানান, ব্র্যাকের মূল কর্মসূচির মধ্যে মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা কর্মসূচি হলো একটি। ১৯৮৬ সাল থেকে আমাদের সমাজের দরিদ্র, অসহায় নির্যাতিত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে আইনি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইতি হত্যাকাণ্ডের খবরটি পত্রিকায় দেখার পর আমরা বিনামূল্যে আইনি সহায়তার দায়িত্ব নিয়েছে। এ মামলার শেষ পর্যন্ত ব্র্যাক বিনামূল্যে সকল ধরনের আইনি সহায়তা প্রদান করে যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬১টি জেলায় এ কর্মসূচি কাজ করে যাচ্ছে। হবিগঞ্জ জেলায় বিনামূল্যে সেবা প্রদানের জন্য হবিগঞ্জ আদালতে ৫ জন প্যানেল আইনজীবী নিযুক্ত রয়েছে। হবিগঞ্জ জেলাতে ৭টি আইন সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ও আইনের আশ্রয় বঞ্চিত মানুষকে আইনি সহায়তার পাশাপাশি ভিকটিমকে উদ্বার, কাউন্সিলিং, পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রেরণ, ঘটনার তথ্যানুসন্ধান, পুনর্বাসন সহযোগিতা, সরকারি আইন সহায়তা কেন্দ্রে প্রেরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্র্র্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এছাড়া ৭টি অফিসের মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনে অতি প্রয়োজনীয় আইনের মৌলিক বিষয়ে আইন শিক্ষা ক্লাস এর মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সচেতন করা হচ্ছে। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে লোকাল কমিউনিটি লিডার্স, উপজেল প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও আইন প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য সরকারি- বেসরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে যাচ্ছে।