মঞ্জুরে আলম লাল, জুড়ী :: আহবায়ক কমিটি দিয়ে সাড়ে চৌদ্দ বছর পার করে দিল মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ দীর্ঘ সময়ে উপজেলা সম্মেলন বা কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালের আগস্টে জুড়ীকে প্রশাসনিক উপজেলা ঘোষণা করা হয়। একই বছরের ২৮ নভেম্বর আব্দুল খালিক চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করে জেলা আওয়ামী লীগ। ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা থাকলেও দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছরে তা করতে ব্যর্থ হয় আহ্বায়ক কমিটি। এই ১৪ বছরে বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে মাত্র ১৪ টি বর্ধিত সভা হয়েছে।
এ দীর্ঘ সময়ে উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল খালিক চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ মুমীত আসুক, আজির উদ্দিন, সদস্য জাহানারা তৈমুছ, মনোহর আলী, মজম্মিল আলী, আব্দুল হাছিব, আব্দুর রাজ্জাক ফটিক, মাসুক আহমদ, নুরুল ইসলাম ফয়েজ, আছাদ উদ্দিন চৌধুরী, ডা. কাজী আকমল হোসেন ও মকদ্দছ আলী মায়া মিয়াসহ ১২সদস্য মারা যান। এই শূন্য পদ গুলো আহবায়ক কমিটি পুরণ করতে সক্ষম হয়নি। এমনকি প্রয়াত নেতাদের স্মরণে একটি শোক সভা বা দোয়া মাহফিলও করতে পারেনি এ কমিটি। তাছাড়া সদস্য নবীব আলী, অধ্যক্ষ ফখর উদ্দিন ও সেলিনা বেগম স্থায়ী ভাবে প্রবাসে পাড়ি জমালে এ পদ গুলোও শূন্য রয়।
দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ স্থানীয় সংসদ সদস্য কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। এমপি এলাকায় আসলে নেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। এমপি চলে গেলে নেতারাও গায়েব হয়ে যান। সেই সাথে প্রশাসনে বিলীন হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, বঙ্গবন্ধুর জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী এমনকি জাতীয় দিবস গুলোও দলীয়ভাবে পালন করা হয় না। জাতীয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে দলীয় নেতারা বক্তব্য রেখেই দায়িত্ব আদায় করেন।
চৌদ্দ বছরে উপজেলার পূর্ব জুড়ী, পশ্চিম জুড়ী, গোয়ালবাড়ী, সাগরনাল ও ফুলতলা ইউনিয়নের নতুন কমিটি হলেও সদর জায়ফরনগর ইউনিয়ন সম্মেলনের কোন উদ্যোগই নেয়া হচ্ছে না। দীর্ঘ ১৪ বছরে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে খ্যাত জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন বা কমিটি না হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে দলীয় কার্যক্রম। নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাউর রহমান বলেন, গত জেলা সম্মেলনের আগে জুড়ী উপজেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের কারণে কেন্দ্রের নির্দেশে তা বন্ধ হয়। আগামী ৫ তারিখ সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সাথে সিলেটে বৈঠক আছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আশা করি ২-৩ মাসের মধ্যে জুড়ী উপজেলা সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন হবে।