মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চাতলাপুর সড়কের তানজিম আবাসিক হোটেলের গোসলখানা থেকে গত ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে সাইফুল ইসলাম (২৪) নামে এক বিজিবি সদস্যের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার ১ মাস ২ দিন পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল ৪৬ নম্বর বিজিবি ব্যাটেলিয়নের ফটকের সামনের সড়ক থেকে হত্যাকারী বিজিবি সদস্য আসাদুল ইসলামকে (২৫) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে কুলাউড়ার লালারচক বিজিবি ক্যাম্পের সদস্য আসাদুল ইসলাম নিহত শরীফপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য সাইফুল ইসলামের নামে শমশেরনগরস্থ তানজিম আবাসকি হোটেলের তৃতীয় তলায় ২১১ নম্বর কক্ষ কয়েক ঘন্টার জন্য ভাড়া নেয়। পরে বিজিবি সদস্য সাইফুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে প্রথমে ঘুমের ঔষধ মিশ্রিত কোমল পানীয় পান করায়। সাইফুল কোমল পানীয় পান করে হোটেল কক্ষের গোসল খানার মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়লে সহযোগী বিজিবি সদস্য আসাদুল ইসলাম গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ধারালো ছুরি দিয়ে তার পেট কেটে ফেলে। এরপর গোসল খানায় লাশ ফেলে হোটেল কক্ষ তালাবদ্ধ করে আসাদুল পালিয়ে যায়। যাবার সময় হত্যাকারী হোটেল ব্যবস্থাপনের অনুপস্থিতিতে কক্ষের তালা চাবি অফিসে রেখে যায়।
ঘটনার ৪ দিন পর ২৯ ডিসেম্বর তৃতীয় তলার পানির লাইনে কাজ করতে গিয়ে হোটেল কক্ষের গোসলখানায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ পরিচয়পত্র দেখে বিজিবি সদস্যের লাশ নিশ্চিত করে। পরে শ্রীমঙ্গলস্থ ৪৬ নম্বর বিজিবি ব্যাটেলিয়ন সাইফুল ইসলামের লাশ উদ্ধারকালে প্রাথমিক তদন্তে মূল হত্যাকারী অপর বিজিবি সদস্য আসাদুলের পরিচয় নিশ্চিত করে। এর পর থেকে বিজিবি ব্যাটেলিয়নে মূল হত্যাকারী আসাদুলকে আটকে রেখে বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৩১ জানুয়ারি তাকে বিজিবি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অরুপ কুমার চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আসামি আসাদুলকে গ্রেফতার করে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অরুপ কুমার চৌধুরী হত্যাকারী আসাদুলকে বিজিবি থেকে বরখাস্ত করে বিতাড়িত করার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এর আগে তিনি বিজিবির সূত্রে বিজিবি ব্যাটেলিয়ল ফটকের সামনের সড়ক থেকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেল আসাদুলকে মৌলভীবাজার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।