সিলেটের গোয়াইনঘাটে বিয়ের দাবিতে পুলিশ কনস্টেবল প্রেমিকের বাড়িতে পাঁচ দিন ধরে অনশন করছেন সাবিনা নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। উপজেলার নয়াগাঙেরপাড় গ্রামের আব্দুর রহমানের পুলিশ সদস্য ছেলের সাথে বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অনশন করছেন তিনি।
এ ঘটনায় গোটা এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, জাফলংয়ের নয়াগাঙেরপাড় গ্রামের আবু তাহের মিয়ার মেয়ে ও জৈন্তাপুর ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাবিনার সাথে একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে পুলিশ সদস্য সোলেমান এর দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। কিন্তু তাদের দু’জনের এ সম্পর্কের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের অন্য আরেক মেয়ের সাথে সোলেমানের বাবা মা তার বিয়ে ঠিক করেন। সে মোতাবেক বিয়ের দিন ও তারিখ ধার্য্য করে তার পরিবারের লোকজন।
গত ৯ জানুয়ারি বিয়ের আগের দিন গায়ে হলুদের মধ্য দিয়ে পুরোদমে শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এমন পরিস্থিতিতে সোলেমান তাদের বাড়িতে আসার জন্য সাবিনাকে বার বার ফোন দিতে থাকে। এক পর্যায়ে সোলেমানের প্ররোচনায় পড়ে গায়ে হলুদের রাতেই সাবিনা প্রেমিক সোলেমানের বাড়িতে আসে। বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সোলেমানের বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পরই তার বাবা মা সাবিনাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সাবিনা বিয়ের দাবিতে তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই রাতেই সোলেমানের বাবা মা ও আত্মীয় স্বজন মিলে বিয়ের জন্য ঠিক করে রাখা তাদের পছন্দের পাত্রীকে নিয়ে সোলেমানকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেন। বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে সোলেমান তার বাবা মায়ের চাপের মুখে পরে তাদের পছন্দের মেয়েকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করে আত্মগোপনে রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
এদিকে প্রেমিকের প্রতারণার বিচার চেয়ে ও বিয়ের দাবি জানিয়ে আজ ৫ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে রয়েছেন সাবিনা।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, প্রায় দুই বছর ধরে সোলেমানের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছে। সেই সুবাদে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সোলেমান তার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করেছে। সাবিনা বলেন, এখন সে আমাকে তার বাড়িতে আসতে বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সোলেমান বাড়িতে ফিরে এসে আমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা না দিবে ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এই বাড়িতে অবস্থান করবো। এর ব্যাতিক্রম কোন কিছু ঘটলে আমি এই বাড়িতেই আত্মহত্যা করবো।
এ ব্যাপারে সাবিনার প্রেমিক সোলেমানের সাথে কথা বলার জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে সোলেমান কোথায় আছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহালম মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর ওই বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনরত মেয়েটির সাথে কথা বলেছি। মেয়েটিকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে তার সিদ্ধান্তে অটুট রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।