মঞ্জুরে আলম লাল, জুড়ী:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) সংসদীয় আসনের জুড়ী উপজেলায় সব বিভেদ ভুলে এক কাতারে শামিল হয়েছে বিএনপি। এ নির্বাচনী আসনের জুড়ী উপজেলা গঠনের শুরু থেকেইে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে পৃথক দু’টি গ্রুপ ছিল। জাতীয় ও দলীয় বিভিন্ন দিবস পৃথক ভাবে পালিত হত। বিভিন্ন সময়ে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে গ্রুপের রাজনীতি দলের প্রার্থীদের পরাজয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাবেক বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আছাদ উদ্দিন বটল ও নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ২০১৫ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত উপজেলা চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনে আছাদ উদ্দিন বটল সমর্থিত প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে হোসনে আরাকে প্রার্থী করেন নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু। দু’জনকেই পরাজয় বরণ করতে হয়। জুড়ী উপজেলায় বিএনপি পরিবারের এই ভাঙ্গাগড়ার খেলায় সর্বশেষ গত অক্টোবর মাসের ৭ ও ২৮ তারিখ উপজেলা বিএনপির দু’টি কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তাপ ছড়ায়।
এরই মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ আসনে বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবাদুর রহমান চৌধুরী ও নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু পরে এবাদুর রহমান চৌধুরী অসুস্থতাজনিত কারণে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু জোটের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পান।
এদিকে এবাদুর রহমান চৌধুরী মনোনয়ন জমা দিলে আছাদ উদ্দিন বটল গ্রুপে চাঙ্গা ভাব দেখা দেয়। কিন্তু পরে এবাদুর রহমান চৌধুরী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণায় তাঁদের মধ্যে নেমে আসে হতাশা। অপরদিকে বটল গ্রুপের অবস্থান নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে নাসির উদ্দিন মিঠু গ্রুপ।
অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসির উদ্দিনের গোয়ালবাড়িস্থ বাড়িতে ২৩ দলীয় জোটের ব্যানারে আয়োজিত সভায় উপস্থিত হন আছাদ উদ্দিন বটল। খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে দলীয় প্রার্থী ও প্রতীকের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি। তাঁর এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এক কাতারে শামিল হল বিএনপি পরিবার। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন চাঙ্গা ভাব বিরাজ করছে।