একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ ও বাহুবল) আসনে ভোটযুদ্ধে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক দুই মন্ত্রীর ছেলে। একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর ছেলে শাহ্ নেওয়াজ মিলাদ গাজী। অপরজন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ্ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে সদ্য গণফোরামে যোগ দেওয়া রেজা কিবরিয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থী এবং মিলাদ গাজী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী।
বর্তমান রাজনীতির দুই মেরু থেকে একে অন্যের মুখোমুখি হলেও দুই জনই একই এলাকার বাসিন্দা। তাছাড়া ড. রেজা ও মিলাদ গাজীর পারিবারিক রাজনৈতিক দর্শনও অভিন্ন। কারণ মিলাদ গাজীর পিতা ফরিদ গাজী যেমন ছিলেন বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রী। ঠিক তেমনিভাবে কিবরিয়া ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী। এ অবস্থায় নির্বাচনী এলাকাসহ সমগ্র জেলায় তারা এখন ব্যাপকভাবে আলোচিত।
এলাকার ভোটাররা মনে করেন, পারিবারিকভাবে দুই প্রার্থীরই রয়েছে সোনালী রাজনৈতিক অতীত। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ভোটের মাঠে। যে কারণে দুই জনের মধ্যে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা প্রবল। তবে তারা দুই জনই নির্বাচনে নতুন মুখ হলেও জনপ্রিয়তায় কমতি নেই। পিতার পরিচয়ে পরিচিত এই দুই প্রার্থী এলাকায় ক্লিন ইমেজের অধিকারী।
এদিকে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিলাদ গাজী এলাকায় প্রচার প্রচারণা চালালেও ঐক্যফন্ট প্রার্থী রেজা কিবরিয়া এখন কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এ ব্যাপারে রেজা কিবরিয়ার কর্মী-সমর্থকরা বলছেন মনোনয়পত্রে ত্রুটি থাকার কারণে আইনি জটিলতা কাটিয়ে আবার তিনি নির্বাচনের মাঠে ফিরে এসেছেন। তাই তাকে কয়েকদিন কেন্দ্রে অবস্থান করতে হচ্ছে। তবে শীঘ্রই তিনি তার সমর্থকদের কাছে ফিরে আসবেন।
তাদের পারিবারিক জনপ্রিয়তা আর নিজেদের যোগ্যতায় জয় ছিনিয়ে আনতে পারবেন বলে দুই প্রার্থীই আস্থা রাখছেন ভোটারদের উপর।
এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী শাহ্ নেওয়াজ মিলাদ গাজী বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন এখানে জনগণের জন্য কাজ করে গেছেন। এই জনপদের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন আমার পিতা। তাছাড়া এই জনপদের মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও উন্নয়নে মুগ্ধ এবং জনগণ আমাকে অনেক ভালোবাসে, তাই আমার জয় সু-নিশ্চিত।’
এ ব্যাপারে জাতীয় ঐক্যফন্টের প্রার্থী রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘এখানে আমার দাদা ও নানার বাড়ি। তাই এ এলাকার জনগণের সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া হবিগঞ্জের জনগণ ছিল আমার বাবার প্রাণপ্রিয়। আমার বাবাকেও এখানকার মানুষ খুব ভালোবাসতেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা আমার বাবাকে জনগণের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যদিও আমি আমার বাবার আসন থেকে নির্বাচন করিনি। কিন্তু জনগণের ইচ্ছায় আমি এ আসন থেকে নির্বাচন করছি। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয় আমারই হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’