আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ৬টি আসনে মোট ৬৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ১৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
২ ডিসেম্বর রোববার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী এমদাদুল হক মনোনয়ন বাছাই শেষে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। সব হিসাব-নিকাশ শেষে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষিত হবে ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে।
সিলেট-১:
সিটি করপোরেশন ও সদর নিয়ে গঠিত এ আসনে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। হলফনামায় সাক্ষর না থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
এই আসনে যাদের মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত হয়েছে তারা ড. এ কে আব্দুল মোমেন (আওয়ামী লীগ), খন্দকার মুক্তাদির ও ইনাম আহমদ চৌধুরী (বিএনপি), উজ্জল রায় (বাসদ-মার্কসবাদী), প্রণব জ্যোতি পাল (বাসদ), রেদওয়ানুল হক (ইসলামী আন্দোলন), মোহাম্মদ ফয়জুল হক (ইসলামী ঐক্যজোট), ইউসুফ আহমদ (পিপুল পার্টি), মাহমুদুর রহমান চৌধুরী (জাপা), মাওলানা নাসির উদ্দিন।
সিলেট-২:
বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর নিয়ে গঠিত এ আসনে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক সরদার, মুহিবুর রহমান, মোহাম্মদ আব্দুর রব।
১ শতাংশ ভোটারের সাক্ষরের সত্যতা যাচাইয়ে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
এই আসনে চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন- তাহমিনা রুশদীর লুনা ও ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস (বিএনপি), ইয়াহিয়া চৌধুরী এহিয়া (জাপা), মাওলানা কাজী আমিন উদ্দিন (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), মনোয়ার হোসেন (এনপিপি) মুনতাছির আলী (খেলাফত মজলিস), মো. মোশাহিদ খান (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট), মোকাব্বির খান (গণফোরাম)।
সিলেট-৩:
দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ও মো. আব্দুল ওদুদ।
বিএনপির প্রার্থী কাইয়ুম চৌধুরীর এফিডেভিটে সাক্ষর না থাকায় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ ও জোনায়েদ মোহাম্মদ মিয়ার দেয়া ১ শতাংশ ভোটারের সাক্ষর জটিলতায় প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।
এই আসনে যাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে তারা হলেন- মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), শফি আহমদ চৌধুরী, এম এ হক, ব্যারিস্টার এম এ সালাম (বিএনপি), মাওলানা আতিকুল ইসলাম ও মাওলানা নজরুল ইসলাম (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), দিলওয়ার হোসাইন (খেলাফত-মজলিস), এম এ মতিন চৌধুরী (জাপা)।
সিলেট-৪:
গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর নিয়ে গঠিত এ আসনে ৮জন মনোনয়নপত্রের মধ্যে একটি মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
দলীয় মনোনয়নের ছাড়পত্র না থাকায় এবং এফিডেভিটে সাক্ষর না থাকায় জাতীয় পার্টির এম ইসমাইল আলীর মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়।
এই আসনে চূড়ান্ত হয়েছে ৭ জনের মনোনয়নপত্র। তারা হলেন, ইমরান আহমেদ (আওয়ামী লীগ), দিলদার হোসেন সেলিম ও অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান (বিএনপি), মাওলানা আতাউর রহমান (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), মনোজ কুমার সেন (বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি), জিল্লুর রহমান (ইসলামী আন্দোলন), তাজ উদ্দিন তাজ আহমদ (জাতীয় পার্টি)।
সিলেট-৫:
কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ নিয়ে গঠিত এই আসনে বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিনসহ পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে ৭ জনের মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সাংসদ সেলিম উদ্দিন (জাপা) ছাড়াও যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন এম এ মতিন (ইসলামী ঐক্যজোট), আহমদ আল ওয়ালী (স্বতন্ত্র), মাওলানা নুরুল আমিন (ইসলামী আন্দোলন), ফয়জুল মুনির চৌধুরী (স্বতন্ত্র)।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিনের ব্যাংক চালানের মূল কপি ও হলফনামায় সাক্ষর না থাকায় প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। এছাড়া ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী এম এ মতিন চৌধুরীর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়জুল মুনির চৌধুরীর হলফনামায় সাক্ষর না থাকায়, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. নুরুল আমীন বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় ঋণখোলাপি (ঋণের জামিনদার) এবং আহমদ আল ওয়ালী স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১ শতাংশ ভোটারের তালিকার সত্যতা না থাকায় প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
সিলেট-৫ আসনে যাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে তারা হলেন হাফিজ আহমদ মজুমদার (আওয়ামী লীগ), মাওলানা উবায়েদুল্লাহ ফারুক (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), মামুনুর রশিদ মামুন ও শরিফ আহমদ লস্কর (বিএনপি), মাওলানা ফরিদ উদ্দিন (জামায়াত), মো. শহীদ আহমদ চৌধুরী (মুসলিম লীগ), অ্যাডভোকেট বাহার উদ্দিন আল রাজি (গণফোরাম)।
সিলেট-৬:
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার নিয়ে গঠিত এ আসনে দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে ৮ জনের মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এই আসনে সিলেট-৫ আসনের বর্তমান সাংসদ সেলিম উদ্দিন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও হলফনামায় সাক্ষর না থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়ারও মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়।
জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিনের হলফনামায় সাক্ষর না থাকায় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গির হোসেন মিয়ার দেয়া ১ শতাংশ ভোটারের তথ্য সঠিক না হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই আসনে যাদের মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে তারা হলেন- নুরুল ইসলাম নাহিদ (আওয়ামী লীগ), ফয়সাল চৌধুরী, হেলাল খান ও মো. আব্দুর রকিব (বিএনপি), মাওলানা আসাদ উদ্দিন আল মাহমুদ (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), শমসের মবিন চৌধুরী (বিকল্পধারা), মাওলানা হাবিবুর রহমান (জামায়াত), আজমল হোসেন (ইসলামী আন্দোলন)।
প্রসঙ্গত, পুনঃতফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিলো গত ২৮ নভেম্বর বুধবার। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ছিলো আজ ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর।