বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

একাধিক বাংলাদেশির অভিবাসন অনুমতি বাতিলের ভুল স্বীকার যুক্তরাজ্যের
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক



বিজ্ঞাপন

বেশ কয়েকজন দক্ষ বাংলাদেশি পেশাজীবীর অভিবাসন অনুমতি বাতিলের ক্ষেত্রে ভুল করার কথা স্বীকার করে নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার দেশটির অভিবাসন মন্ত্রী ক্যারোলিন নোকস পার্লামেন্টে এক বিবৃতিতে ৩১টি আবেদনের ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়ে ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এই ঘটনার শিক্ষা ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অ্যাকটিভিস্টরা বলছেন, এসব আবেদনকারীর বেশিরভাগই বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান থেকে আসা। আবেদনে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতির একটি বিতর্কিত ধারায় এসব বাংলাদেশির বসবাস ও কাজের অনুমতি বাতিলের ক্ষেত্রে তাদের ভালো আচরণ ও চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিল।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় ৩১ জনের ভিসা আবেদন পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। আয়ের বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়ায় মূলত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা এসব আবেদন বাতিল করা হয়েছিল। ৩১টি বাতিল আবেদনের মধ্যে ১২টির ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়ে তাদের বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাকি ১৯টি আবেদন পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে আরও তথ্য দরকার বলেও জানিয়েছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পার্লামেন্টের বিবৃতিতে ক্যারোলিন নোকস বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে এসব মামলা নিস্পত্তি করতে এই ৩১ জনের সঙ্গেই যোগাযোগ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এধরণের ভুল সবসময়ই দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর এই ভুল যে প্রভাব ফেলেছে তা কমাতে পারবো না’। তিনি বলেন, ‘ আমি নিশ্চিত করতে পারি এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে আমাদের ভবিষ্যত সিদ্ধান্তে এই অল্প সংখ্যক মানুষের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার শিক্ষা ব্যবহার করা হবে।

যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী কমপক্ষে পাঁচ বছর দেশটিতে থাকার পর এসব আবেদনকারী স্থায়ী বসবাস বা বসবাসের অনির্দিষ্টকালীন অনুমতির (আইএলআর) জন্য আবেদন করেছিলেন। যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে টাইয়ার ১ ভিসা ব্যবহার করেছিলেন এসব আবেদনকারীরা। ২০১১ সালে ওই ভিসা পাঁচ বছর মেয়াদে একাধিকবার বাড়ানোর সুযোগ বাতিল হয়ে গেলেও বিশেষ কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আগের আবেদনকারীরা স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারতেন।

এধরণের অনেক আবেদন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে বাতিল হওয়ার বিষয়টি নজরে আনেন দেশটির বেশ কয়েকজন আইনজীবী। ব্রিটিশ অভিবাসন আইনের ৩২২ (৫) ধারা ব্যবহার করে এসব আবেদন বাতিল করা হয়। বিবেচনামূলক এই ধারায় দন্ডিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের যুক্তরাজ্যে বসবাসের আবেদন বাতিলের কথা বলা হয়েছে। এসব পেশাজীবীর আবেদন বাতিল করেতে কর বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আয় বিষয়ক তথ্যে অসঙ্গতি থাকায় তাদের চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করো হয়েছিল।

‘চূড়ান্ত জালিয়াত’ আখ্যা দেওয়া এসব আবেদনকারীর বিষয়ে চলতি বছরের শুরুতে পর্যালোচনা শুরুর নির্দেশ দেন অভিবাসনমন্ত্রী ক্যারোলিন নোকস। এছাড়া সংশ্লিষ্টকর্মীদের ‘অতিসতর্কতা’র শিকার হয়েছেন বলে ধারণা করা হয় তাদের বিষয়েও পর্যালোচনা শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার প্রকাশ হয় সেই পর্যালোচনা প্রতিবেদন। প্রতিবেদন প্রকাশ করতে গিয়ে নোকস বলেন, বেশিরভাগ আবেদন সঠিকবাবে বিবেচনা করা হলেও অল্প সংখ্যকের বিষয়ে ভুল হয়ে গেছে। তিনি বলেন আবেদনকারীদের এই অমিল ব্যাখ্যার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অনেক ঘটনাতেই প্রমাণ এবং আবেদনকারীদের ব্যাখ্যা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। অনেকেই একে কর বিষয়ক ছোটখাট ভুল বলে দাবি করলেও আমরা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। নোকস বলেন, অনেকেই এই অমিলকে স্বনির্ভর আয় বলে বর্ণনা করেছেন। যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাস আবেদনের জন্য এটা অন্যতম কারণ বলেও বর্ণনা করেন তিনি।

২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোট এক হাজার ৬৯৭টি আবেদন বাতিল করে। এর মধ্যে ৮৮ শতাংশ বা এক হাজার ৪৯০টি আবেদনে কর বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আয় বিষয়ক তথ্যে গরমিল পাওয়া যায়।