একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর। চারদিকে বাজছে নির্বাচনী ঢামাঢোল। যদিও বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের দাবি ভোটগ্রহণ পেছানোর। তারপরও নির্বাচনী প্রস্তুতি চলছে সর্বত্র।
বৃহত্তর সিলেটের ১৯টি আসনে লড়াইয়ের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিপুলসংখ্যক রাজনীতিক। এই মনোয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যুদ্ধে আছেন ৪৬ আইনজীবীও। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশায় তারা দিন গুনছেন।
সিলেট-১ ও ৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন পান যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মনির হোসাইন ও সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুর রকিব মন্টু। বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন চান দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালাম।
সিলেট-৪ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান ও সুপ্রিম কোর্টের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান সেলিম মনোয়ন চাইছেন।
সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন চাইছেন সিলেট বিভাগ আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোয়ন চান জেলা আইনজীবীর সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রুহুল আনাম মিন্টু ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশায় দলের সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে আছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা রশীদ আহমদ। আসনটিতে ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন চাইছেন নেজামে ইসলাম পার্টির শীর্ষনেতা মাওলানা অ্যাডভোকেট আবদুর রকীব।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে নৌকার হয়ে লড়তে চান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত সরকার, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার, ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট হায়দার চৌধুরী লিটন, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান সেলিম, ব্যারিস্টার কাউসার তালুকদার।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে নৌকার কাণ্ডারি হতে চান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার অনুকুল তালুকদার ডাল্টন। আর আসনটিতে ধানের শীষ নিয়ে লড়তে চান যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনে ২০ দলীয় জোটের টিকিট চান সাবেক সংসদ সদস্য জমিয়ত নেতা মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী অ্যাডভোকেট ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন। আসনটিতে নৌকার মাঝি হতে চান সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইসলাম আলী।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ জাতীয় পার্টি থেকে এবং ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন ও তার সহোদর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পিপি অ্যাডভোকেট ড. খায়রুল কবির রুমেন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান। ধানের শীষের মনোনয়ন চান প্রবাসী বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার ইয়াহইয়া।
হবিগঞ্জ-১ আসনে নৌকার হয়ে লড়তে চান অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী।
হবিগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রী অ্যাডভোকেট মাহফুজা বেগম সাঈদা, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার এনামুল হক, অ্যাডভোকেট আবুল আজাদও নৌকার মাঝি হতে চান।
হবিগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির, জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন মোল্লা মাসুম নৌকার মনোনয়ন চাইছেন। ধানের শীষে লড়তে চাইছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক সেলিম। জেলা খেলাফত মজলিসের হয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সারোয়ার রহমান চৌধুরী শামীমও এ আসনে নির্বাচন করতে চান।
হবিগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট দেওয়ান মারুফ সিদ্দিকী, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন জিতু ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়দুল হক সুমন নৌকার মাঝি হতে চান। এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়তে চান খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী।
মৌলভীবাজার-১ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী ধানের শীষ নিয়ে লড়তে চাইছেন। আসনটিতে অ্যাডভোকেট আফজল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম শামীমও লাঙ্গল প্রতীকে লড়তে চাইছেন।
মৌলভীবাজার-২ থেকে ধানের শীষ প্রতীকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা এবং ২০ দলীয় জোটের হয়ে জাপা (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান লড়তে চাইছেন। নৌকার মনোনয়ন চাইছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম।
মৌলভীবাজার-৪ আসনে নৌকার হয়ে লড়তে চাইছেন জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এসএম আজাদুর রহমান।
মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে শিগগির সব রাজনৈতিক দলই তাদের মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। তখনই বোঝা যাবে, কতোজন আইনজীবী ভোটের মাঠের চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, পুনঃতফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ২ ডিসেম্বর। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। আর ভোটগ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর।