রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

জনগণ আবারও নৌকায় ভোট দেবে: সিলেটে অর্থমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক



বিজ্ঞাপন

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি বলেছেন, বাংলাদেশে গত ১০ বছর একটানা আওয়ামী লীগ সরকার ছিল। এই সময়ে যেসব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা দৃশ্যমান। এর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে পরপর দুইবার একই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে কী পরিমাণ উন্নয়ন হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকারের এসব কাজের মূল্যায়ন করে, উন্নয়নের স্বীকৃতি দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।

তিনি শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মাসব্যাপি বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেশের চারভাগের তিনভাগ মানুষকে দারিদ্রসীমার উপরে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। এখনও কিছু লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস করছে। আমরা আরো দশবছর সময় পেলে দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর করতে সক্ষম হবো। আমরা সেই গৌরব অর্জনের অপেক্ষায় রয়েছি।

বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হওয়া ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলীর প্রশংসা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেকোন মানুষ তখনই পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ হতে পারেন যখন তিনি নিজেকে জনকল্যাণে সম্পূর্ণ নিবেদিত করেন। শেখ হাসিনার এই সফলতার কারণ হচ্ছে, তিনি বিনাস্বার্থে নিজেকে জনকল্যাণে নিয়োজিত করেছেন।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদের সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ এমপি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে গঠিত নতুন রাজনৈতিক জোট যে সাত দফা দাবি দিয়েছে, তার কোনটাই সংবিধান সম্মত নয়। সাতটাই সংবিধান পরিপন্থী। এই ধরণের দাবি কখনোই গ্রহণ করা হবে না।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ তার বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপির উচ্চসিত প্রশংসা করে বলেন, তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক দূর এগিয়েছে। যা সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। শেখ হাসিনার ভিশন ও উন্নয়নের রূপরেখার অন্যতম ও বিশ্বস্ত অংশিদার হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সিলেটের উন্নয়ন দেখে আমি অভিভূত। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এখানে সংসদ সদস্য ছিলেন বলে এটা সম্ভব হয়েছে। পূণ্যভূমি সিলেট সবসময় মর্যাদাপূর্ণ আসন। মুহিত সাহেবের মতো একজন দেশপ্রেমিক মানুষ এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর মতো আরেকজন রাজনীতিবিদ এখানে জন্মাবে কী না আমি জানি না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মুহিত সাহেব ইতোমধ্যে ১২টি জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছেন। আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় গেলে আরেকটি বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে মুহিত সাহেব রেকর্ড সৃষ্টি করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যজোটের সাত দফা দাবিকে সংবিধান পরিপন্থী মন্তব্য করে বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের সময় সরকারি দল ক্ষমতায় থাকে। নির্বাচনের পরে আরেকটা সরকার হলে তা বিলুপ্ত হয়। সুতরাং, তাদের দাবিগুলো অযৌক্তিক। একদম মানা সম্ভব নয়।

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোটের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, তিনি (ড. কামাল) আদর্শের কথা বলেন। তিনি বলেন আমি তারেক জিয়ার সাথে ঐক্য করি না, জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করি না। অথচ, বর্তমানে বিএনপির নেতৃত্বে তারেক জিয়া এবং জামায়াত বিএনপি জোটে আছে। সুতরাং, তিনি যে ঐক্য করেছেন তাতে অসত্য আছে। এর মাধ্যমে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিভ্রান্ত হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণ আস্থা রাখবে এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে পুনরায় বিজয়ী করবে।

‘বর্তমান অবস্থায় তফসিল ঘোষণা করা হলে জোট আন্দোলনে নামবে’- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বিগত ১০ বছরে আন্দোলনে মাঠে দাঁড়াতে পারেনি। তারা ২০১৩ সাল থেকে জ্বালাওপোড়াও রাজনীতি শুরু করেছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছে। পরে তারাই এটাকে নিজেদের ভুল হিসেবে স্বীকার করেছে।

তোফায়েল আহমদ বলেন, এখন এরকম আন্দোলনের চিন্তা করা বিএনপির জন্য আরো বড় ভুল হবে। কারণ, তারা দেশে অরাজকতা, বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে বাংলার মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃংখলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

নির্বাচনকালে মন্ত্রীসভা ছোট করা বা রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী এখতিয়ার। তিনি নিজে বলেছেন, সংবিধানে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কেবিনেটে আছি। তাঁর নেতৃত্বেই আমরা দৈনন্দিন কাজ করবো। এবং এটা হবে রুটিনওয়ার্ক।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, সরকারের একেকটি মেগাপ্রকল্প দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতির মাইলফলক। সিলেটে স্পেশাল ইকোনমিক জোন, হাইটেক পার্ক, সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন, কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণসহ বিগত ১০ বছরে এ অঞ্চলে যেসব উন্নয়ন হয়েছে তার জন্য সিলেটবাসী সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।

সিলেট চেম্বারের পরিচালক আব্দুর রহমান জামিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীরদার।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জজ কোর্টের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট শাহ মোশাহিদ আলী।

উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি অব পুলিশ মো. কামরুল আহসান, সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম, র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ, রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান, অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আল কবির, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ প্রমুখ।