সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে এনা পরিবহণের যাত্রীবাহী বাস উল্টে হতাহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন- বরিশালের বানারিপাড়া থানার গরফদার গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ সরদারের ছেলে ও বর্তমানে সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহের বাসিন্দা বাহরাইন প্রবাসী মাছুম সরদার (৩৫) ও তার শ্বশুর একই এলাকার বেতাল গ্রামের মৃত মোবারক হাওলাদারের ছেলে সুলতান মিয়া হাওলাদার (৫৫)।
রোববার বাহরাইন ফিরে যাবার ফ্লাইট ছিলো মাছুম সর্দারের। দেশব্যাপী পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের কারণে শনিবার রাতেই তিনি সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেন।
নিহত মাছুমের ছোট ভাই বাহরাইন প্রবাসী মুহিব উল্লাহ কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মাছুম সর্দার বেশ কদিন আগে বাহরাইন থেকে দেশে ফিরেন। পরিবারের সাথে ছুটি কাটিয়ে তার ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো।
তিনি বলেন, ঢাকাস্থ শাহজালাল আন্তার্জাতিক বিমানবন্দরে রোববার ভোরের এক ফ্লাইটে আমার ভাইয়ের বাহরাইন যাওয়ার কথা ছিল। সে লক্ষ্যে তিনি শনিবার দিবাগত রাতে শ্বশুরকে নিয়ে এনা পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঘাতক বাস আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে।
ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমার অসুস্থ বাবা হার্ট অ্যাটাক করেছেন। এছাড়া চার বছর বয়সী একমাত্র ভাতিজাসহ পরিবারের লোকজন বার বার মূর্চা যাচ্ছেন। সবাইকে নিয়ে আমি এখন দিশেহারা।
তিনি বলেন, আমার পিতা অসুস্থ থাকায় বেয়াইকে দেখতে সিলেট আসেন ভাইয়ের শ্বশুর সুলতান মিয়া হাওলাদার। ফিরে যাবার সময় জামাইকে বিমানে তুলে দিয়ে তিনি বরিশাল ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বাস দুর্ঘটনায় তিনিও চলে গেলেন।
এদিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন, বুয়েটের অধ্যাপক সৈয়দ জামাল আহমদ (৫০), আছমা সরকার পপি (৩৪), কবির মিয়া (৫০), আবু নাসির মোল্লা (৫০),জাকির হোসেন (৩৮), হৃদয় রায় (১৮), সেলিনা আক্তার (৩৫), শাহানাজ খান (৪০), শরিফ (২১), মো. তুষার (৮), রোজিনা আক্তার (৩৫), মোতাহার হোসেন (৪৭), ফরিদা ইয়াসমিন (৪২), টিপু সুলতান (২৪), আশরাফুল কবির (৫০), সুফিয়া বেগম (২৫) মো. শহিদ (২৭)।
উল্লেখ্য ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ওসমানীনগর অংশে ঢাকাগামী এনা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে শনিবার রাত পৌনে একটায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ, তাজপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থল গিয়ে হতাহতদেও উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
তাজপুর বালাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ রাজা মিয়া বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত দুই ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি। তাৎক্ষনিক ভাবে ১৭ জন আহত যাত্রীকে হাসপাতালে প্রেরণ করতে সক্ষম হই।