নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে সৌদি কনস্যুলেটের ভিতরে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ।
জামাল খাসোগি চার দিন আগে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তুর্কি কর্তৃপক্ষ বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে খাসোগিকে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভিতর হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ধারণা এটা পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং মৃতদেহ কনস্যুলেট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক খাসোগি মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করার পর থেকে তার আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
সৌদি কর্তৃপক্ষ রোববার খাসোগিকে কনস্যুলেটের ভিতর হত্যার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। খাসোগির নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করতে সৌদি আরবের একটি তদন্তকারী দল তুরস্কে পৌঁছেছে।
বিন মার্কিন ব্লুমবার্গ নিউজকে বলেন, তুরস্কের কর্তৃপক্ষ চাইলে ওই ভবন তল্লাশি করে দেখতে পারে।
ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাকে তদন্তের সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র জানায়, সৌদি আরব ‘বিশেষ করে খাসোগিকে হত্যার জন্য’ ১৫ জন খুনির একটি দল্কে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিল।
সৌদি আরবের মদদে তুরস্কের মাটিতে বিদ্রোহী একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে প্রমাণিত হলে, দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাবে।
সৌদি আরব ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কাতারের বিরোধ শুরু হওয়ায় তুরস্ক কাতারের পক্ষ নেয়। আবার ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককেও জোরদার করেছে তুরস্ক।
তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে তদন্তকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবে এবং খাসোগির পরিণতি কী হয়েছে তা তারা খুঁজে বের করবেন।
তুর্কি পুলিশ সিকিউরিটি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করেছেন এবং তারা খাসোগিকে কনস্যুলেট থেকে বের হতে দেখেননি।
জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তাদের উপদেষ্টা খাসোগির কলাম সৌদি আরবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং সৌদি যুবরাজের নীতির সমালোচনা না করতে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। এরপর পর তিনি দেশ ত্যাগ করেন।
৫৯ বছর বয়সী এই কলাম লেখক যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে লেখালেখি করতেন।
ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি গিয়েছিলেন তার ডিভোর্সের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে, যেন তিনি তার তুর্কি বাগদত্তা হাতিসকে বিয়ে করতে পারেন।
খাসোগি তার ফোন কনস্যুলেটের বাইরে হাতিসের কাছে রেখে যান। তিনি না ফিরে এলে হাতিস যেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোয়ানের এক উপদেষ্টাকে ফোন করেন, এই নির্দেশনাও দিয়ে যান তিনি।
হাতিস জানান, তিনি খাসোগির জন্য কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষা করতে করতে মধ্যরাত পার হয়ে গেলেও তাকে সেখান থেকে বের হতে দেখেননি। পরে বুধবার কনস্যুলেট খোলার আগে আগে আবার তিনি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন।