রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘রাজনীতি এখন গরিবের ভাউজ। গ্রামের ভাষায় ভাউজ হচ্ছে ভাবি। গরিবের বউ হচ্ছে সবার ভাবি। এখন রাজনীতিও তেমন। যে কেউ চাইলেই রাজনীতিতে আসতে পারছে। কিন্তু অন্য পেশায় কেউ চাইলেই যেতে পারে না।’
শনিবার (৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি যদি বলি ফিজিক্সের টিচার হবো তাহলে হাসির পাত্র হওয়া ছাড়া কিছুই হবো না। কিন্তু রাজনীতি গরিবের ভাউজ। গ্রামে গরিবের বউকে সবাই ভাবী বলে।’
‘ঠিক একইভাবে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার সবাই রাজনীতি করে। ভিসি স্যারও অবসরের পর রাজনীতি করবে। সরকারি সচিব, প্রিন্সিপাল সেক্রিটারি, কেবিনেট সেক্রেটারি, অবসরের পর সবাই বলে রাজনীতি করি।’
তিনি বলেন, ‘চাকরি করে কেউ ৫৯ বছর ৬০ বছর যা করার করে ফেলেছে। এরপর এসে বলে রাজনীতি করবো। চাকরি না করে সরাসরি রাজনীতিতেই ঢুকে পড়েন। ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং না হয়ে পাস করে সরাসরি রাজনীতিতে আসেন। বিসিএস পাস করে রাজনীতিতে আসেন।’
‘পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিআইজি, আইজিরাও রাজনীতি করে। যে পুলিশ তোমার বাহিনী দিয়ে আমাকে কতো বাড়ি দিয়েছো, সেই তুমি আবার আমার সাথে আসছো রাজনীতি করতে। আর শিল্পতি ব্যবসায়ীরাতো আছেই। যারা রাজনীতি করছে তাদের কলেজ থেকেই আসতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি সরকারিদল বিরোধীদল সবাইকে বলছি, যারা ছোট থেকে রাজনীতি করে আসছে শুধু তারাই থাকুক। এক্সপার্টদের দরকার আছে তারা বিশেষজ্ঞ হিসেবেই আসুক। কিন্তু তারা সরাসরি এসে এমপি-মন্ত্রী হয়ে যায়। এটা যেনো কেমন লাগে। যার জন্য আমাদের দেশে রাজনীতির গুণগত পরিবর্ত হচ্ছে না।’
এ ক্ষেত্রে ঢাকা কিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘নেতৃত্ব ছাত্র সমাজ থেকেই গড়ে উঠতে হবে। এরই বাইরে যে ধারা চলছে তা থামাতে হবে। সমস্ত ছাত্র সমাজকে সম্মিলিতভাবে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।’
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার জীবনের অন্যতম মাইলফলক অর্জন করতে যাচ্ছেন ২১ হাজার ১১১ জন গ্র্যাজুয়েট। যা ঢাবির ইতিহাসে সর্বাধিক গ্র্যাজুয়েট। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৯৬টি স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচডি এবং ২৭ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেয়া হবে।