প্রথমবারের মতো ইলিশের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। প্রায় তিন বছর গবেষণার পর দেশের বিজ্ঞানীরা এই সফলতা অর্জন করেন।
শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইলিশ জিনোম সিকোয়েন্সিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলি টিমের সমন্বয়ক ও ফিসারিজ বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম।
শনিবার সকালে বাকৃবি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ইলিশের ভৌগলিক স্বীকৃতি (জিআই) পাওয়ার পর দেশীয় ইলিশের রেফারেন্স জিনোম প্রস্তুতকরণ, জিনোমিক ডাটাবেজ স্থাপন ও মোট জিনের সংখ্যা নির্ণয় করার জন্য ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গবেষণা কাজ শুরু করেন বাকৃবির গবেষকরা। প্রায় ৩ বছরের গবেষণার পর বিশ্বে প্রথমবারের মতো উন্মোচিত হয়েছে ইলিশ মাছের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিনোম হচ্ছে কোনও জীবের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। জীবের জন্ম, বৃদ্ধি, প্রজনন এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াসহ জৈবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় জিনোমের মাধ্যমে। ইলিশের জিনোমে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার নিউক্লিওটাইড রয়েছে, যা মানুষের জিনোমের প্রায় এক চতুর্থাংশ।’
অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম জানান, ‘ইলিশের জিনোম সিকোয়েন্স জানার মাধ্যমে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে খুব সহজে। এর মাধ্যমে নতুন নতুন তথ্য উন্মোচনের মাধ্যমে ইলিশের টেকসই আহরণ নিশ্চিত করা যাবে। এছাড়া ইলিশের জন্য দেশের কোথায় কোথায় ও কতটি অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করা সহজ হবে। অন্য দেশের ইলিশ থেকে আমাদের ইলিশ বৈশিষ্ট্যগতভাবে স্বতন্ত্র কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
জানা যায়, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর কাজ শুরু করে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই ইলিশের পূর্ণাঙ্গ ডি-নোভো-জিনোম অ্যাসেম্বলি প্রস্তুত হয়। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক জিনোম ডাটাবেজ ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনে জমা করা হয় ইলিশের সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স। তাছাড়া ইলিশের জিনোম নিয়ে গবেষণালব্ধ ফলাফল ২টি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলমের নেতৃত্বে গবেষক দলের অন্যরা হলেন- পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্লা, বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম ও ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ গোলাম কাদের খান।