জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বাদেজমা গ্রাম থেকে জাহেদা আক্তার পপি (২৪) নামে এক ভয়ঙ্কর নারী প্রতারককে আটক করে পুলিশে কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
আটক পপি নিজেকে এনজিওকর্মী পরিচয় দিয়ে টিউবওয়েল, শিশুখাদ্য ও শিশুভাতা দেয়ার জন্য গ্রামের মানুষের নাম তালিকাভুক্ত করে টাকা আদায়ের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছিল।
পপি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নিজ বাউরবাগ গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন উরফে সালামের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জকিগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, সুলতানপুর ইউনিয়নের বাবুরবাজার থেকে রিকশাযোগে যাওয়ার পথে বাদেজমা গ্রামের রিকশাচালক ফয়সল আহমদের নাম-ঠিকানা জানতে চায় পপি।
রিকশাচালককে পপি জানায় সে এনজিও কর্মকর্তা। তাদের এলাকায় ২০০ টিউবওয়েল এবং স্কুলগ্রামী শিশুদের ১৪০০ টাকা করে মাসিক শিশুভাতা দেয়া হবে। নাম তালিকাভুক্ত করার জন্য প্রত্যেককে ৫০০ করে টাকা দিতে হবে। পপির কথা বিশ্বাস করে রিকশাচালক ফয়সল তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে দুইদিন অবস্থান করে বাদেজমা গ্রামের দুলাল আহমদ, রিয়াদ আহমদ, বকুল মিয়া, আকরাম আলীসহ অনেকের কাছ থেকে টিউবওয়েল ও খাদ্যসামগ্রী দেয়ার কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও ৫০০ টাকা করে আদায় করে পপি।
ওসি হাবিবুর রহমান আরও বলেন, বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য শিশুদের মাঝে কিছু চকলেট ও বিস্কুট বিতরণ করে পপি। সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে টিউবওয়েল ও শিশুভাতা বিতরণ করা হবে বলে জানায়। তার বাবা লন্ডন এবং স্বামী ফ্রান্স প্রবাসী জানিয়ে পপির মাসিক বেতন ৭০ হাজার টাকা বলে স্থানীয়দের জানায়। একপর্যায়ে তার কথাবার্তা সন্দেহ হলে সুলতানপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী।
ওসির নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে পপিকে দেখে অবাক হয় পুলিশ। ওই নারী সপ্তাহখানেক আগে জকিগঞ্জের আটগ্রাম এলাকায় গণধর্ষণের শিকার হয়ে থানায় অভিযোগ দিতে এসেছিল। পুলিশ তাকে সিলেট এমএজি ওসামানী হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেছিল। ওসিসি থেকে পপি পালিয়ে গেলে বিপাকে পড়ে পুলিশ।
জকিগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই সৈয়দ ইমরোজ তারেক বলেন, পপি নিজেকে বাংলাদেশ রুরাল কমিউনিটি হেল্থ কমপ্লেক্সের একজন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা করে আসছিল।
ফাতেমা জান্নাত জুলি, সুমি, রুমি, পপি নানা নামে এবং তার বাড়ি সিলেটের বাগবাড়ি, ঢাকা, গাজীপুর বলে নিজের পরিচয় দিচ্ছিল। ইতোপূর্বে সিলেটের কোতোয়ালি, শাহপরাণ ও গোলাপগঞ্জ থানায় প্রতারণার দায়ে আটক হয়েছিল পপি। পপি এসএসসি পাস করেই প্রতারণায় জড়িয়ে পড়ে। জকিগঞ্জের খাসিরচকে তার স্বামীর বাড়ি বলে পুলিশকে জানিয়েছে। পপির সঙ্গে একটি প্রতারকচক্র রয়েছে বলেও জানান এসআই সৈয়দ ইমরোজ তারেক।