বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

ক্রিকেটার মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে স্ত্রীর যৌতুকের মামলা
খবর: মানবজমিন

খবর: মানবজমিন



বিজ্ঞাপন

জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন স্ত্রী সামিয়া শারমিন। ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আপিল আদালতে এই মামলাটি করা হয়। ২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর সৈকতের সঙ্গে তার আপন খালাত বোন সামিয়া শারমিন সামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পূর্বে খালাত বোন সামিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে পারিবারিক পরিবেশে কন্যার নিজ বাসায় বরের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে জানা গেছে প্রায় তিন বছর ধরে দু’জনের বনিবনা না হওয়াতে, এ বছর ১৬ই আগষ্ট ডিভোর্স হয়।

সৈকতের দাবি ডিভোর্সের পরও তার স্ত্রী সামিয়া শারমিন ও তার পরিবার এ মামলা করেন।

তবে সামিয়া শারমিন জানান, মূলত ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি, শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন ও বিয়ের ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও সঠিকভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছিলেন না সৈকত। এমনকি তিনি কোনো ডিভোর্সের চিঠিও পাননি। সৈকতের স্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিয়ের প্রায় ৬ বছর হয়েছে। আমরা খালাতো ভাইবোন ছিলাম। সৈকতের সঙ্গে আমার প্রেম ছিল তাই পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়। কিন্তু ও জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমাকে অবহেলা করতে শুরু করে। নানা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আমাকে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতনও করতে থাকে। তবে গত ১৫ই আগষ্ট আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর করে। আমার মোবাইলও ভেঙে ফেলে। সৈকত ও তার পরিবার আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে। আমি শুনেছি ও আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে কিন্তু আমি কোনো চিঠি পাইনি এখনো। আমি ওর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শেষে নারী ও শিশু আদালতে যৌতুকের মামলা করতে বাধ্য হই।’
এ বিষয়ে সৈকত বলেন, ‘আমিও শুনেছি মামলা হয়েছে। যতটা জানি আমার স্ত্রী ও তার পরিবার আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেছে কোর্টে। আমি একটু অবাক হয়েছি যে ডিভোর্স হওয়ার পরও কেন তারা এ মামলা করেছে তা নিয়ে। কারণ আমি তো কাবিন নামা অনুসারে আমার স্ত্রীকে ভরনপোষনের সব টাকা দিতে রাজি আছি। আরেকটি বিষয় হল আমার যে আর্থিক অবস্থা তাতে করে স্ত্রীর কাছ থেকে যৌতুক চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি মনে করি আমাকে হয়রানি করার জন্যই এই মামলা।’

২০১২ তে বিয়ে করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। বলতে গেলে অনেকটা কিশোর বয়েসেই বিয়ে করেছেন এ ক্রিকেটার। জানা গেছে আগে থেকেই দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক পড়ে উঠেছিল। এরপর পারিবারিক ভাবেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে সৈকত বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছে ২০১২ এর শেষে। বলতে গেলে ৬ বছর হয়ে গেছে।’ এছাড়াও ডিভির্সের কারণ নিয়ে এ ক্রিকেটার বলেন, ‘গেল তিন বছর ধরেই আমার সঙ্গে স্ত্রীর কোন বনিবনা হচ্ছিল না। বলতে পারেন মতের অমিল। যে কারণে বেশ কিছু দিন থেকেই আমরা দু’জন আলাদা আছি। যেহেতু আমাদের মিল হচ্ছিল না তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিভোর্সের। এরই মধ্যে সেটি হয়েও গেছে।’

ডিভোর্সের পর এ মামলা হওয়াতে সৈকত মনে করেন তা উদ্দেশ্যমূলক। সৈকতের দাবি, ‘দেখেন আমি দরিদ্র নই। আমার পক্ষে যৌতুক চাওয়া সম্ভব নয়। আর আমাদেরতো ডিভোর্সও হয়ে গেছে। আমিতো কখনো বলিনি যে তাকে প্রাপ্য টাকা দিবো না। এরপরও যেহেতু মামলা হয়েছে তাই বলতে হচ্ছে এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে। আর সেটি কি আমি সঠিক বুঝতে পারছি না। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও আমার সম্মান নষ্ট করতেই এমনটি করছে আমার স্ত্রীর পরিবার।’

গেল ক’বছরে একের পর এক মামলায় জড়াতে দেখা গেলো ক্রিকেটারদের। ২০১৫ সালে পেসার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে তার বান্ধবী হ্যাপির নারী নির্যাতনের মামলা ছিল সবচেয়ে আলোচিত। এরপর গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের দায়ে মামলা হয় আরেক পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীবের বিরুদ্ধে। ২০১৬ তে দ্বিতীয় স্ত্রীর মামলাতে গ্রেফতার হন জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার আরাফতা সানি। এছাড়াও সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মোহাম্মদ শহীদ সহ একের পর এক ক্রিকেটারের বিপক্ষে উঠেছে নারী কেলেঙ্কারি সহ নানা অভিযোগ।