মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

কুলাউড়ায় ‘বীর বাহাদুরের’ তাণ্ডব
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক



বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ক্ষিপ্ত ‘বীর বাহাদুরের’ তাণ্ডবে আতঙ্কিত কুলাউড়াবাসী। উপজেলার একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিচরণকারী মালিকানাধীন ক্ষিপ্ত হাতি ‘বীর বাহাদুরের’ তাণ্ডব ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলা জুড়ে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার মেরিনা চা বাগানসহ আশেপাশের এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ক্ষিপ্ত এ হাতিটি।


সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে কুলাউড়ার গাজীপুর-ফুলতলা সড়কে আদিআদি টিলা সংলগ্ন এলাকায় ক্ষিপ্ত হাতি ‘বীর বাহাদুরের’ আক্রমণের শিকার হয় বাঁশমহালের বাঁশ বহনে নিয়োজিত একটি ট্রাক।

এসময় ‘বীর বাহাদুর’ ট্রাকটিতে ভাঙচুর চালায় ও হামলায় ট্রাকে থাকা বাঁশমহালের ৩ জন শ্রমিকও আহত হন। এ ক্ষিপ্ত হাতিটির মালিক উপজেলার কর্মধার আব্দুল মালিক।

খবর পেয়ে গাজীপুর বন বিটের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ‘বীর বাহাদুরের’ মালিক ও মাহুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।

গাজীপুর বন বিট কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ৪২ বছর বয়সী এ হাতিটি গত কয়েকদিন ধরে কুলাউড়া-জুড়ীর সীমান্ত এলাকার হাড়ারগজ বনে বিচরণ করছে। প্রজনন মৌসুমে হাতিটি ক্ষিপ্ত থাকায় বনের পাশে থাকা মেরিনা চা বাগানে এসে গত ৪/৫দিন ধরে চা গাছসহ ব্যাপক গাছ তছনছ করে। ‘বীর বাহাদুরের’ এমন কাণ্ডে চা বাগানের শ্রমিক ও এসব পথে চলাচলকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায়, সোমবার সকালে কুলাউড়ার গাজীপুরা-ফুলতলা পাহাড়ি সড়ক দিয়ে ২০-২৫ জন শ্রমিকবোঝাই একটি ট্রাক স্থানীয় গুগালীছড়া বাঁশমহালে বাঁশ আনতে যাচ্ছিলো। এ সময় গুজাটিলায় অবস্থানরত হাতিটি আদিআদি মাজার সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নেয় এবং শ্রমিকবোঝাই ট্রাকটিকে ধাওয়া করে আক্রমণ চালায়। এ সময় ‘বীর বাহাদুর’ ট্রাকটি ভাঙচুর চালায় এবং ট্রাকে থাকা শ্রমিকরা ভয়ে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর হামলা চালায় হাতিটি।


এতে তিন শ্রমিক রফিকুল ইসলাম (৩৯), আনোয়ার (৪৫), সিপার (৩৫) আহত হন। এতে উপজেলার মেরিনা, গাজীপুর ঝিমাই ও রেহানা চাবাগানসহ আশেপাশের এলাকার লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক আরও প্রকট আকার ধারণ করে। প্রজনন মৌসুমে উন্মত্ত হাতির আক্রমণে গত দুবছরে দু’জন এই এলাকায় নিহত হয়েছেন।

কুলাউড়ার গাজীপুর বন বিট কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে হাতির প্রজনন মৌসুম থাকায় হাতি ক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে বনাঞ্চল সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় হাতি লোকালয়ে চলে আসে। এ সময় হাতি মানুষ দেখলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং হামলা চালায়।

তিনি আরও বলেন, “হাতিটি অনেক বড় তাই খুব সহজে এটি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর। এর মাহুত যদি এটিকে গভীর বনে নিয়ে যেতে না পারে তাহলে ‘বীর বাহাদুর’কে চেতনানাশক ঔষধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা দ্রুত হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ও নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া নির্দেশ দিয়েছি ওই হাতিটির মালিক ও মাহুতকে। এ ছাড়াও হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্রুত সহযোগিতা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানিয়েছি। হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণ না করা পর্যন্ত গাজীপুর-ফুলতলা সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে।”

হাতিটির মালিক আব্দুল মালেক বলেন, “সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমরা হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণের অনেক চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। বর্তমানে ‘বীর বাহাদুর’ গুজাটিলা বনে আছে।”


আব্দুল মালেক দাবি ‘বীর বাহাদুর’ বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু ও বড় হাতি হওয়ায় এটিকে খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা।