মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকায় ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের দেখতে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করেছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানে এসেছেন ওই রেলে থাকা যাত্রীদের স্বজনেরা। এ সময় নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে এসে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কুলাউড়ার বুকশিমুল গ্রামের বাসিন্দা আনু মিয়া এসেছেন তাঁর কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাকিলের খোঁজে। তিনি বলেন, উপবন এক্সপ্রেসে করে তাঁর ছেলে ঢাকায় যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে ছুটে আসেন। এখন পর্যন্ত ছেলে শাকিলের খোঁজ পাননি আনু মিয়া। মুঠোফোনেও ছেলেকে পাচ্ছেন না বলে তিনি জানান। চিকিৎসা নিতে আসা রুবেল নামের এক যাত্রী জানান, রেলের নিচে অনেক লাশ এখনো চাপা পড়ে আছে।
কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটক থেকে ভেতর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক মানুষ অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা আহতদের দেখতে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে পরিচিতদের খোঁজ করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে আসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. শাহজালালসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন ৪ জনের লাশ রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ। নিহত এই চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। পরাভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার বরমচালে স্টেশন থেকে ২০০ মিটার দূরে কালা মিয়া বাজার সংলগ্ন একটি ব্রিজে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রাত ১০টায় আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিলেট স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ওই ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এর ফলে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন:
কুলাউড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় তিন নারীসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭
কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৩: ভিড় এবং ফেসবুক লাইভের কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত
কুলাউড়ার ট্রেন দুর্ঘটনা: সুযোগ সন্ধানীরা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে যাত্রীদের মালামাল
কুলাউড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা: উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
সড়কের পর সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগও বন্ধ