শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খানকে আটকে রেখে লাভ কী?



বিজ্ঞাপন

তাইসির মাহমুদ:
সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খানকে আটকে রেখে লাভ কী? তাঁদেরকে সংসদে যেতে না দিয়ে, আটকে রেখে গণফোরাম বা বিএনপি কী অ্যাচিভ করতে চায়? সংসদে গেলে বরং নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের দাবি দাওয়া নিয়ে তাঁরা কথা বলতে পারতেন। এলাকার উন্নয়নে কিছুটা হলেও তো কাজ হতো।

সরকার ইতিমধ্যে নিজেদের গোছিয়ে নিয়েছে। ভোট লুটের অভিযোগ মানুষ ভুলতে বসেছে। আগামী পাঁচ বছর যে এভাবেই যাবে এটা অনেকটা নিশ্চয়তার সাথে বলা চলে। শুধু আগামী বছরই না, ভাগ্য প্রসন্ন হলে আগামী কয়েক মেয়াদই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে পারে। আপাতত দেশবাসী কোনো পরিবর্তনের লক্ষন দেখেন না।

সুতরাং সুলতান মনসুর ও মোকাবিবর খান সংসদে না গেলে সরকারের তেমন কিছু যায় আসে বলে মনে হয়না । তাঁরা দুজন সংসদে না গেলে সরকার যদি বড় ধরনের বিপাকে পড়ার সুযোগ থাকতো তাহলে না যাওয়াটাই বেহতর ছিলো। তাদের সংসদের না যাওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারে কোনো চেইঞ্জ আসবে কি? সুতরাং তাঁদের সংসদে যেতে দেয়া উচিত।


সুলতান ভাইকে কাছে থেকে দেখেছি। ২০০৩ সালে সিলেট সিটি মেয়র নির্বাচনে তৎকালিন মেয়রপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ-এর মিডিয়া টিমে মুখ্য ভূমিকা পালনের সুযোগ হয়েছিলো। তখন মরহুম পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, দেওয়ান ফরিদ গাজী, সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ অন্যান্য জাতীয় নেতাদের খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়। তাঁরা প্রায় একমাস সিলেটে অবস্থান করে বদর উদ্দিন কামরানের নির্বাচনী প্রচারণায় নেতৃত্ব দেন। ওই সময় সুলতান ভাইকে কাছে থেকে দেখি। তাঁর মতো একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, বাগ্মী নেতাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে রাখা মোটেও উচিত হয়নি বলে মনে করেনি। এখন তিনি কোন দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন সেটা খুব বড় বিষয় নয়, তিনি একজন জাতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সংসদে তাঁকে দরকার আছে। তাঁকে সংসদে যাওয়া উচিত, সংসদে যেতে দেওয়া উচিত। তাহলে সংসদ একজন যোগ্য নেতা পাবে। এলাকাবাসী একজন যোগ্য প্রতিনিধি পাবে।


অন্যদিকে লন্ডন প্রবাসী মোকাবিবর খান দীর্ঘদিন ধরে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আছেন। গত ১৫ বছরের আমার লন্ডন জীবনে তাঁকে ড. কামাল হোসেনকে সার্ভিস দিতে দেখে আসছি । ড. কামাল লন্ডন এলেই মোকাবিবর খান তাঁকে নিজ গাড়িতে করে নিয়ে লন্ডন ঘুরতেন। এয়ারপোর্ট থেকে আনা ও পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতেন। বিভিন্ন টেলিভিশনে টক শোতে নিয়ে যেতে।

তিনি কোনো দিন এমপি হবেন- এমন চিন্তা করেছিলেন কি-না জানিনা। কারণ ড. কামাল যে দলের চেয়ারম্যান সেই গণফোরাম থেকে কেউ কোনো দিনও এমপি হতে পারেননি । কিন্তু এবার ভাগ্য তাঁকে ধরা দিলো। তিনি ‘উদীয়মান সুর্য’ নিয়ে মনোনয়ন জমা দিলেন তাঁর এলাকা বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ আসনে । নির্বাচনে হারবেন ভেবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতেও চাইলেন। কিন্তু রিটার্নিং অফিসারের অফিসে পৌঁছতে খানিক বিলম্ব হয়ে যাওয়ায় তা প্রত্যাহার করতে পারলে না। প্রার্থী থেকে গেলেন।

কে জানে তাঁর ভাগ্য খুলে যাবে? ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেলো। তাই বিএনপি সমর্থন চলে গেলো মোকাবিবর খানের দিকে। তিনি কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এমপি হয়ে গেলেন।

এখন তিনি গণফোরাম থেকে নির্বাচিত প্রথম এমপি। জীবনে এমপি হওয়া কতবড় ভাগ্যের ব্যাপার । তিনি যদি সংসদে যেতে না পারেন তাহলে মনে আফসোস থেকে যাবে সারাজীবন। তাই তাঁকে যেতে দেয়া উচিত। আটকে রাখা কিছুতেই উচিত বলে মনে করিনা।

লেখক: তাইসির মাহমুদ
সম্পাদক, সাপ্তাহিক দেশ
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
সোমবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।