শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

কিবরিয়া হত্যার ১৪ বছর, বিচার যেন শেষ হচ্ছে না
ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট



বিজ্ঞাপন

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৭ জানুয়ারি রোববার। ২০০৫ সালের এই দিনে হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় তিনিসহ পাঁচজন নিহত হন।

২০০৫ সালের এ দিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। সভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় তিনি ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ মোট ৫ জন নিহত হন। এতে আহত হন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরসহ ৪৩ জন।

দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু ঠিকমতো সাক্ষী না আসা, আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় ঠিকমতো আদালতে হাজির না হতে পারাসহ বিভিন্ন জটিলতায় বিচারকাজ এখন দীর্ঘসূত্রিতায় পড়েছে। এ অবস্থায় বিচার নিয়ে এখনও অনিয়শ্চয়তা রয়েছে নিহতদের পরিবার ও স্থানীয়দের মনে।

ওই ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে বিলম্বিত হয় এর বিচারকার্য। অবশেষে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর রোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের সর্বশেষ চার্জশিট আদালতে জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেছা পারুল। এতে আসামি করা হয় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৩২ জনকে।

২০১৫ সালের ২ জুন মামলাটি বিচারের জন্য সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো করা হয়। এরপর থেকেই মামলার বিচার শুরু হয়েছে। কিন্তু নানান কারণে বিচারকার্যে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলীর পরিবারের সদস্যরা চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকার্য বিলম্বিত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, ১৪ বছরেও মামলার কোনো কিনারা না হওয়ায় হতাশাতো আছেই। তবুও এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চান তারা। সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচার অনতিবিলম্বে সম্পন্ন করা হবে বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।

এ ঘটনায় আহত বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির জানান, কখনও সাক্ষী আসছে না, আবার কখনও গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের ঠিকমতো আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে যেহেতু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার হয়েছে, সেহেতু এ হত্যাকাণ্ডেরও বিচার অবিলম্বেই সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মামলাগুলোর বাদী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান এমপি জানান, বিচারটি চলমান আছে। সবারই প্রত্যাশা বিচারটি তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হোক। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে এ বিচার দীর্ঘসূত্রিতায় রূপ পেয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেকের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। বাকি সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়ার পর মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হবে। আমি বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই কিবরিয়া হত্যার বিচার হবে।

মামলার আইনজীবী সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি (সরকারি কৌশলী) অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর জানান, এখনও পর্যন্ত ১৭১ জনের মধ্যে ৪৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের ঠিকমতো আদালতে হাজির করতে না পারায় ঠিকমতো সাক্ষ্য নেয়া যাচ্ছে না। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।

শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘বর্তমান যে মামলা চলছে তার ওপর আমাদের কোনও ভরসা নেই। এখনও পর্যন্ত এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।’